মিলন কর্মকার রাজু, কলাপাড়া (পটুয়াখালী): মানুষের অমানবিকতায় নাব্যতা হারাচ্ছে নদী। ফলে কমে যাচ্ছে নদীর সংখ্যা। বর্তমানে বাংলাদেশে নদী-শাখানদী-উপনদীর সংখ্যা প্রায় ৭০০। শতবছর আগে এই সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ ছিল। নদী সুরক্ষার দিকে মনোযোগ না দিলে অারো অনেক নদী হারিয়ে যাবে। এর বিরূপ প্রভাব পড়বে জীবনযাত্রায়। তাই নদী বাঁচাতে সবার সম্মিলিত উদ্যোগ নিতে হবে। ‘জল ও জনতন্ত্র’ শীর্ষক সম্মেলনের শেষ দিনে আলোচকরা বাংলাদেশের নদ-নদীর দুরবস্থার কথা তুলে ধরে এসব মন্তব্য করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদরন সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপকূলীয় জনকল্যাণ ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট জয়নাল আবেদিন বলেন, বাঁধ দিয়ে আমরা নদী মেরে ফেলেছি। বাঁধের স্লুইচগেইটগুলো অকেজো হয়ে যাওয়ায় এই অঞ্চল কৃষিকাজের জন্য অনুপযুক্ত হয়ে পড়েছে।
জলের সাথে জীবনের যেমন সম্পর্ক জলের সাথে জীবিকারও ঠিক তেমনই সম্পর্ক উল্লেখ করে ওয়ার্ল্ড ইয়ুথ পার্লামেন্টের প্রধান নির্বাহী সোহানুর রহমান বলেন, পানি নীতিমালা তৈরিতে তরুণদের অংশগ্রহণ ও মতামত নিতে হবে।
একশনএইড বাংলাদেশের পরিচালক ফারাহ্ কবির বলেন, নদী বাঁচাতে জল ও জনতন্ত্র বিষয়টি সামনে নিয়ে এসেছি আমরা। যার মূল লক্ষ্য জনসাধারণকে নদীর উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় যুক্ত করা। এরই একটি উদ্যোগ পানি জাদুঘর। যার মাধ্যমে পানি ও নদী নিয়ে মানুষ নদীর ইতিহাস-ঐতিহ্য জানতে পারছে।
কেন্দ্রীয় কৃষক মৈত্রী’র সভাপতি আলাউদ্দিন শিকদার বলেন, পানি নিয়ে সরকারের অনেক নীতিমালা আছে, তবে তা খসড়া আকারে থাকায় বাস্তবায়ন হচ্ছে না। ।
কলাপাড়া পানি জাদুঘরের কিউরেটর লিপি মিত্র বলেন, মিষ্টি পানির অভাবে অনেকেই পেশা পরিবর্তন করে ফেলছেন। তাই শুধুু সরকার নয় আমাদেরও উদ্যোগ নিতে হবে নদী বাঁচাতে।
নেপালের মহিলা অধিকার মঞ্চের উপদেষ্টা সাবিত্রি পোখারেল বলেন, ইচ্ছাশক্তিই সবচেয়ে বড়, ইচ্ছা থাকলে অনেক বড় বড় কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব। তাই সমস্যা সমাধানে কমিউনিটির লোকজনেরই আন্তরিকতা থাকতে হবে।
অনুষ্ঠানের সভাপতি ড. ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, নদীর ইতিহাস-ঐতিহ্য জানা আমাদের খুবই প্রয়োজন। তৃণমূলের কাছ থেকে পাওয়া ধারণা ও পরামর্শ কাজে লাগিয়ে নদী বাঁচাতে হবে। ভালোবাসা বাড়াতে হবে নদীর প্রতি। তাহলেই নদী বাঁচবে।
একশনএইড বাংলাদেশ কুয়াকাটার পানি জাদুঘর মিলনায়তনে বুধবার কুয়াকাটায় জল ও জনতন্ত্র বিষয়ক lদুই দিনের সম্মেলন শুরু হয়।