হাকিম বাবুল, শেরপুর: নালিতাবাড়ী উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার মো. সাহাব উদ্দিনকে নিয়ে বিতর্ক ওঠায় উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কমিটি থেকে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তরফদার সোহেল রহমান ও নালিতাবাড়ী উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কমিটির সদস্য সচিব বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে একটি চিঠিতে উপজেলা কমিটি থেকে সাহাব উদ্দিনের বদলে ডেপুটি কমান্ডার আব্দুস ছালামের নাম পাঠানো হয়েছে। তবে ডেপুটি কমান্ডার আব্দুস ছালাম যাচাই-বাছাই কমিটি থেকে নিজেকে সরিয়ে নেওয়ার জন্য আবেদন করেছেন। যে কারণে সাত সদস্যের কমিটিতে একজনকে ছাড়াই যাচাই-বাছাই কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
জানা গেছে, নালিতাবাড়ীর ১৪ জন মুক্তিযোদ্ধা মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আ. ক. ম. মোজাম্মেল হকের কাছে সাহাব উদ্দিনকে আত্মসমর্পণকারী দাবি করে গত বছরের ২২ ডিসেম্বর লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগে বলা হয়, সাহাব উদ্দিন ১৯৭১ সালে ভারতের মেঘালয়ে যুদ্ধের প্রশিক্ষণ নিলেও নালিতাবাড়ীতে অপারেশনে এসে সবার অজান্তে একটি এলএমজি ও ২০০ রাউন্ড গুলিসহ ঝিনাইগাতীর আহমদনগর ক্যাম্পে পাকসেনাদের কাছে আত্মসমর্পণ করেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধের অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রদান করায় পাকসেনারা তাকে হত্যা না করে জামালপুর কারাগারে বন্দি করে রাখে। স্বাধীনতার পর তিনি কারাগার থেকে মুক্তি পান। ২০০৫ সালে চারদলীয় জোট সরকারের আমলে তিনি মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গেজেটভুক্ত হন।
এদিকে সাহাব উদ্দিনকে কমিটি থেকে বাদ দেওয়ার প্রতিবাদে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কার্যালয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের একাংশ প্রতিবাদ সভা করে অবিলম্বে নালিতাবাড়ীর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কমিটি বাতিলের দাবি জানিয়েছে।
প্রতিবাদ সভায় মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার মো. সাহাব উদ্দিন, ডেপুটি কমান্ডার আব্দুস ছালাম, মুক্তিযোদ্ধা তোফাজ্জল হোসেন, আব্দুল বারী ও শ্রমিক নেতা মোখলেছুর রহমান লেবু প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
এ বিষয়ে মো. সাহাব উদ্দিন বলেন, আমার বিরুদ্ধে একটি গোষ্ঠী ষড়যন্ত্র করছে। আমি এর তীব্র নিন্দা জানাই। এ ঘটনার মধ্য দিয়ে আমাকে এবং স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের অপমানিত করা হয়েছে। আামরা এ ব্যাপারে আইনগত পদক্ষেপে যাব।
এদিকে পূর্বঘোষিত সময় অনুযায়ী আজ শনিবার শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কার্যক্রম শুরু হয়।
নালিতাবাড়ী উপজেলায় গেজেটভুক্ত ১২ জন এবং অনলাইনে আবেদনকারী ৬৯ জন মুক্তিযোদ্ধার যাচাই-বাছাই কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এদের মধ্যে একজনের ব্যাপারে আপত্তি উঠেছে বলে জানা গেছে।