রতন সিং, দিনাজপুর: পায়ে হেঁটে ১০৮ দিনে দেশভ্রমন শেষ করলেন দিনাজপুরের যুবক নাসিম। ‘আগামী দিনের ভবিষৎ’ ‘আর নয় শিশু শ্রম, এবার চাই শিক্ষা’ এসব শ্লোগান নিয়ে বাংলাদেশের ৬৪টি জেলা সফলভাবে ভ্রমন শেষ করেন এই তরুণ শিক্ষার্থী রোভার স্কাউট নাসিম তালুকদার।
মঙ্গলবার দুপুর পৌনে ১ টার সময় দিনাজপুর গোর-এ শহীদ বড় ময়দানের ‘০’ পয়েন্টে এসে তার ভ্রমন শেষ হয়।
যাত্রা শেষ করে নাসিম তালুকদার জানান, আমি প্রতিদিন গড়ে ৩৫-৪০ কি. মি. রাস্তা পায়ে হেঁটে পাড়ি দিয়েছি। আমার সময় লেগেছে ১০৮ দিন। যার নির্ধারিত সময় ছিল ১৩০ দিন। আর ২২ দিন আগেই ভ্রমণ সমাপ্ত করতে পেরেছি। এটি আমার জীবনের এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় সফলতা।
তিনি আরও জানান, ২০০৬ সালের আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার হিসাব অনুযায়ী দেশে প্রায় ৭৪ লাখ শিশু বিভিন্ন কর্মস্থলে নিয়োজিত। এদের মধ্যে ১৩ লাখ শিশু অধিক ঝুঁকিপূর্ণ কাজে রয়েছে বলে জানা গেছে।
তবে বেসরকারি পরিসংখ্যানের হিসাবে দেখা গেছে, দেশে শিশু শ্রমিকের সংখ্যা রয়েছে ৭০ লাখ। আর ঝুঁকিপূর্ণ শিশু শ্রমিকের কাজ করছে ১৫ লাখ। সরকারের নিয়ম অনুযায়ী ১৪ বছরের নিচের শিশুরা কেউ কোনো ধরনের কাজের সঙ্গে যুক্ত হতে পারবে না। অথচ এটি বাস্তবায়নের কোনো লক্ষণই দেখা যায় না।
দিনাজপুর গোর-এ শহীদ বড় ময়দানের ‘০’ পয়েন্টে নাসিম তালুকদারকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা ও স্বাগত জানান দিনাজপুর পৌরসভার কাউন্সিলর আবু তৈয়ব আলী দুলাল, বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ারুল কাদির জুয়েলসহ বিভিন্ন মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ।
এর আগে নাসিম দিনাজপুর প্রেসক্লাবে উপস্থিত হলে সেখানে প্রেসক্লাবের সভাপতি চিত্ত ঘোষ ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম নবী দুলাল নাসিম তালুকদারকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান।
এদিকে দিনাজপুরের প্রবেশ মুখে দশ মাইল মোড়ে তাকে দিনাজপুর রোভার স্কাউটের সম্পাদক জহুরুল হকের নেতৃত্বে শতাধিক রোভার সম্বর্ধনা জানায়। পরে তারা সবাই নাসিম তালুকদারের সাথে পায়ে হেঁটে দিনাজপুরে আসে।
এর আেেগ দিনাজপুর জিরোপয়েন্ট থেকে রোভার স্কাউট নাসিম তালুকদার ২২ অক্টোবর ২০১৬ তারিখে পায়ে হেঁটে দেশ ভ্রমণে বের হন। ৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ তারিখ, মঙ্গলবার দুপুর পৌনে এক টায় দিনাজপুর জিরোপয়েন্টে এসে তার যাত্রা শেষ হয়।
দিনাজপুর কেবিএম কলেজ থেকে সদ্য এইচএসসি পাস করা শিক্ষার্থী মো. নাসিম তালুকদার এক ভাই ও দুই বোনের মধ্যে বড়। মা নাসিমা খানম বাক প্রতিবন্ধী। পেশায় গৃহিণী। বাবা হারুনুর রশিদ বাচ্চু পেশায় কৃষক।