নাচোল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নানা সমস্যা ও অনিয়ম

অলিউল হক ডলার, নাচোল: চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি নানা সমস্যা, অনিয়ম আর দুর্নীতি নিয়ে চলছে। হাসপাতালে রোগীরা সঠিক চিকিৎসা সেবা ও ওষুধ পায় না বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী রোগীরা। ফলে তারা বাধ্য হচ্ছে স্থানীয় ক্লিনিকগুলো থেকে চিকিৎসা সেবা নিতে। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন নাচোল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডা. শফিকুল ইসলাম।

২০১০ সালের ২১ অক্টোবর নাচোল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্্রটি ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নিত করা হয়। কিন্তু সে তুলনায় এখনও জনবল নেই। খাবার তালিকায় ৫০ শয্যার রোগীদের স্থলে ৩১ শয্যার রোগীদের খাবারই রয়েছে বলে জানান ডা. শফিকুল ইসলাম।

হাসপাতালের একটি সূত্র জানিয়েছে, হাসপাতাল ক্যাম্পাসে বিভিন্ন অফিসের বেশ কিছু কর্মকর্তা/কর্মচারী বসবাস করছেন। তারা মাসে যে ভাড়া পরিশোধ করেন তা হাসপাতালের কোষাগারে জমা হয়না। ডা: শফিকুল ইসলাম ও হেডক্লার্ক (বড়বাবু) হাসপাতালের ক্যাম্পাসের প্রথম শ্রেণির সরকারি কোয়ার্টারে বসবাস করলেও মাসিক ভাড়া সরকারি কোষাগারে পরিশোধ করেন না বলে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে।  ডা: শফিকুল ইসলাম ৮০’র দশক থেকে নাচোল হাসপাতালে চাকুরি করে আসছেন। এর মধ্যে কয়েকবার বদলি হলেও প্রমোশন নিয়ে ইউএইচএ হিসেবে আবার তিনি এ হাসপাতালেই রয়েছেন। বেশি পরিচিত হওয়ায় তিনি অন্যান্য কর্মচারীদের নজরদারিতে রাখতে পারেন না। কর্মচারীরা তাদের নিজ ইচ্ছায় যে যার মতো চলে। ফলে অনেক সময় রোগী জরুরি বিভাগে বসে থাকলেও ডাক্তার পাওয়া যায় না।

হাসপাতালে অজ্ঞান (এনেসথেসিয়া) ডাক্তার নেই দীর্ঘদিন থেকে। অন্যান্য ডাক্তাররাও নিয়মিত থাকেন না। তারা বাইরে বিভিন্ন ক্লিনিকে রোগী দেখেন বলে অভিযোগ রয়েছে।  ফলে রোগীরা সঠিক সময়ে চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী ২৪ ঘন্টা স্টেশনে থাকার নিয়ম থাকলেও তা  মানছেন না হাসপাতালের ডাক্তাররা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক হাসপাতালের একজন জানান, নাচোল হাসপাতালের ক্যাম্পাসে বেশ ক’জন বহিরাগত পরিবার বসবাস করছেন। এর মধ্যে রয়েছেন উপজেলা হিসাব রক্ষণ অফিসের অফিস সহকারী মোসা: তাহসীনা ও মাস্টারোলে কর্মরত একজন নারী। উপজেলা শিক্ষা অফিসের তিন জন কর্মচারী এবং ডেমিয়েন  ফাউন্ডেশনের যক্ষ্মা ও কুষ্ঠ বিভাগের তিন জন কর্মচারী।

২০/২৫ বছর থেকে হাসপাতালে ওয়ার্ড ইনচার্জ এর দায়িত্ব পালন করছেন সিনিয়র স্টাফ নার্স সুফিয়া। তিনি এ হাসপাতালের একজন প্রভাবশালী নেত্রী বলে জানা গেছে, তার হুকুমেই চলে মেডিকেলের বিভিন্ন দফতর। তার খবরদারিতে ক্ষুব্ধ মেডিকেলের ডাক্তার, নার্স ও মেডিকেল এ্যাসিস্টেনসহ অন্যান্য কর্মচারীরা। এ বিষয়ে জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ কাজী শামীম হোসেনের সাথে শনিবার মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.