রতন সিং, দিনাজপুর: দিনাজপুরের সাবেক বিএনপি নেতা কথিত পীর ও তার গৃহপরিচারিকাকে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা।
সোমবার রাত ৮টার দিকে বোচাগঞ্জের আটগাঁও ইউনিয়নের দৌলায় এ জোড়া খুনের ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন কাদেরিয়া মোহাম্মদিয়া খানকা শরিফের কথিত পীর ফরহাদ হোসেন চৌধুরী (৬২) ও তার গৃহপরিচারিকা রুপালী বেগম পারুল (১৯)। দুর্বৃত্তরা তাদের গুলি করে ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যা করে। পারুল মুলদুয়ার গ্রামের হসের আলীর মেয়ে।
এ ঘটনায় পুলিশ মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
ফরহাদ এবং পারুলকে বুকে গুলি করা হয়। তাদের দুজনেরই হাতের কব্জি কেটে ফেলে খুনিরা। পারুলের শরীরের বিভিন্নস্থানে ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে। ফরহাদ হোসেনের লাশ তার শোবার ঘরের বিছানায় আর পারুলের লাশ রান্নাঘরের মেঝেতে পাওয়া যায়।
স্থানীয় এমপি খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, পুলিশের রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুক ও পুলিশ সুপার মো. হামিদুল আলমসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। উগ্র জঙ্গি সংগঠন হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত বলে ওই পীরের ওই পিরের অনুসারীরা ধারণা করছেন ।
ঘটনার পর থেকে পারুলের স্বামী পলাতক রয়েছেন।
খানকাহ শরিফের খাদেম সাইদুর রহমান ও মুরিদ সুমী বেগম জানান, তারা রাত ৯টায় এসে রক্তাক্ত লাশ দেখতে পেয়ে চিৎকার করলে এলাকাবাসীসহ পীরের অনেক মুরিদ হাজির হন। খবর পেয়ে পুলিশ এসে মৃতদেহের সুরতহাল সম্পন্ন করে।
বৃহস্পতিবার (৮ মার্চ) পারুলের সাথে সিরাজগঞ্জ থেকে আসা কথিত মুরিদ সিরাজুল ইসলামের বিয়ে সম্পন্ন হয়। আগামী মাসে পারুলকে উঠিয়ে দেওয়ার কথা ছিল বলে হসের আলী জানান। ঘটনার পর থেকে সিরাজুলের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।
দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্তের পর দুজনের মৃতদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করেছে পুলিশ।
বোচাগঞ্জ থানার ওসি আরজু মোহাম্মদ সাজ্জাদ জানান, পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। আসামি গ্রেফতারের জন্য অভিযান শুরু হয়েছে।
পীর ফরহাদ হোসেন চৌধুরী দিনাজপুর পৌর বিএনপির সভাপতি ছিলেন। ২০০০ সাল থেকে রাজনীতির সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে তিনি কাদেরিয়া মোহাম্মদিয়া খানকা শরিফ প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি ছিলেন দিনাজপুর জেলা সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। পরে ওই সংগঠনের সাধারণ সম্পাদকও নির্বাচিত হন তিনি।
মঙ্গলবার বিকেল ৪টায় দিনাজপুর শহরের গোর-এ শহীদ ময়দানে ফরহাদ হোসেন চৌধুরীর প্রথম নামাজে জানাজা ও বিকেলে গ্রামের বাড়ি দৌলায় দ্বিতীয় নামাজে জানাজার পর পারিবারিক গোরস্তানে তাকে দাফন করা হয়।