করোনা ভাইরাস সংক্রমণের কারণে শিক্ষায় বাংলাদেশের অর্জন ধরে রাখা এবং স্কুল বন্ধ থাকায় আয়মূলক কাজে যুক্ত হওয়া ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষায় ফিরিয়ে আনা কঠিন হবে। এরকম প্রেক্ষাপটে শতভাগ ভর্তি অব্যাহত রাখা ও মানসম্মত শিক্ষা প্রদান বড় চ্যালেঞ্জ হবে। টেলিভিশন, রেডিও ও অনলাইনে সরকার স্কুলের পাঠদান চালু রাখলেও এই প্রক্রিয়ায় শতভাগ শিক্ষার্থী অন্তর্ভুক্ত হতে পারেনি। বিশেষ করে গ্রামীণ ও সুবিধাবঞ্চিত শিশুরা এসব কার্যক্রমের বাইরে থেকে গেছে। এরকম শিশুদের একটি বড় অংশ পরিবারকে সহায়তা করার জন্য বিভিন্ন আয়মূলক কাজে যুক্ত হয়েছে। এ চ্যালেঞ্জ কাটিয়ে উঠতে সরকারকে ঝরে-পড়া শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ সহায়তা তহবিল গ্রহণসহ এর যথাযথ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে।
আজ সোমবার এডুকেশন সেক্টর প্ল্যান ও এসডিজি-৪’ শীর্ষক এক ভার্চুয়াল পরামর্শ সভায় শিক্ষা বিশেষজ্ঞ ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য পক্ষ সরকারের কাছে এ আহ্বান জানান।
জাতীয় শিক্ষানীতি, সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা , ভিশন ২০২১ ও এসডিজি-৪ এর অভীষ্ট ও লক্ষ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে প্রথমবারের মতো জাতীয়ভাবে একটি সমন্বিত শিক্ষা পরিকল্পনা তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। শিক্ষা এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে ঢাকাস্থ ইউনেস্কো অফিস এ পরিকল্পনার খসড়া প্রণয়ন করেছে। জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ে পরামর্শসভার মাধ্যমে সংশ্লিষ্টদের মতামতের ভিত্তিতে পরিকল্পনাটি চূড়ান্ত করা হবে। এ উদ্যোগের ধারাবাহিকতায় আজ গণসাক্ষরতা অভিযান ও দর্পণ এর যৌথ আয়োজনে চট্টগ্রাম বিভাগের অংশগ্রহণকারীদের নিয়ে এ ভার্চুয়াল পরামর্শসভা অনুষ্ঠিত হয়।
পরামর্শসভায় বক্তারা আরও বলেন, শিক্ষায় শতভাগ অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করতে হলে, করোনার সময়ে যারা শিক্ষার সাথে যুক্ত হতে পারেনি তাদের ফিরিয়ে আনার জন্য সহায়তা তহবিল ছাড়াও শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে আস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে। শিক্ষকদের প্রস্তুত করতে হবে। শিক্ষার্থীদের ক্ষতি পুষিয়ে নেয়ার জন্য আলাদা ব্যবস্থা করতে হবে। এছাড়া শিক্ষায় বিনিয়োগ করাসহ ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা আনতে হবে। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষকদের জন্য পৃথক ক্যাডারের দাবিও করেন বক্তারা। শিক্ষকদের কেবল বেতন বাড়ানোই নয় যোগ্যতা ও দক্ষতা অনুযায়ী প্রণোদনা দেওয়ার তাগিদও দেন তাঁরা।
সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কুমিল্লা জেলা প্রশাসক আবুল ফজল মীর। বক্তব্য রাখেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও গণসাক্ষরতা অভিযানের নিবার্হী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী, শিক্ষা খাত পরিকল্পনার খসড়া প্রণয়নকারী দলের সদস্য খন্দকার সাখাওয়াৎ আলী ও ইউনেস্কোর কর্মসূচি কর্মকর্তা শিরিন আক্তার। সভাপ্রধান ছিলেন শিক্ষা বিশেষজ্ঞ ও পরিকল্পনা প্রণয়নকারী দলের সদস্য ড. মঞ্জর আহমেদ । মূল প্রক্ষাপট উপস্থাপন করেন পরিকল্পনা প্রণয়নকারী দলের সদস্য ড. জিয়া-উস-সবুর। সভা সঞ্চলনা করেন গণসাক্ষরতা অভিযানের উপ-পরিচালক কে এম এনামুল হক। স্বাগত বক্তব্য রাখেন দর্পণের প্রকল্প পরিচালক বাসন্তি সাহা। সভায় ঢাকাসহ কুমিল্লা, নোয়াখালী, ফেনী ,লক্ষ্মীপুর থেকে শিক্ষাসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা, অভিভাবক ও স্কুল ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যরা অংশ নেন।
বিজ্ঞপ্তি