সাতক্ষীরায় স্বপ্নপ্রকল্পের বার্ষিক নারীকর্মী সম্মেলন

আমিনা বিলকিস ময়না, সাতক্ষীরা: সরকারের স্বপ্ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক আমিনুল আরিফিন বলেছেন, যে নারীরা স্বপ্ন নিয়ে এগিয়ে চলেছে, নিজেদের ভিক্ষাবৃত্তি থেকে দূরে সরিয়ে নিজেদের কর্মজীবী পরিচয়ে পরিচিত করেছে, তারা একদিন স্বপ্নের বাংলাদেশ বিনির্মাণে অংশিদার হবে। বাংলাদেশকে সফল দেশে রূপান্তর করতে কর্মজীবী নারীরা নেতৃত্ব দেবে। কর্মজীবী নারীরা বাংলাদেশকে সবদিক দিয়ে সফল করতে যেমন ভূমিকা রাখবে, ঠিক তেমনি নিজেদের পরিবারকে শিক্ষা, কাজে ও সচেতনতায় সফল করতে ভূমিকা রাখবে।

সাতক্ষীরায় স্বপ্নপ্রকল্পের বার্ষিক নারীকর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত।

‘উৎপাদনশীল ও সম্ভাবনাময় কর্মের সুযোগ গ্রহণে নারীর সামর্থ্য উন্নয়ন’ শ্লোগানকে সামনে রেখে দরিদ্র নারীদের আর্থিক উন্নয়নে সরকারের নিজস্ব স্বপ্ন প্রকল্প’র আওতায় সাতক্ষীরায় অনুষ্ঠিত বার্ষিক নারী কর্মী সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। জেলা প্রশাসন ও ইউএনডিপি’র আয়োজনে নারী সমাবেশে সহ¯্রাধিক কর্মজীবী নারীর অংশগ্রহণ ছিল।

শনিবার সকাল সাড়ে দশটায় জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক এস এম মঈনুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশের উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক আবুল কাশেম মো: মহিউদ্দিন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বপ্ন প্রকল্পের জাতীয় প্রকল্প পরিচালক আমিনুল আরিফিন। সমাবেশ ও আলোচনা পর্বের আগে সাতক্ষীরা কালেক্টরেট চত্বর থেকে বের হয় বর্ণাঢ্য র‌্যালি।

সমাবেশে প্রধান অতিথি আরিফিন আরও বলেন, প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য সমন্বিত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের মাধ্যমে অর্থনৈতিক উন্নয়নের সুযোগগুলো গ্রামীণ দরিদ্র নারী ও অসহায় জনগোষ্ঠীর কাছে পৌঁছে দেয়া এবং তাদেরকে আকস্মিক বিপদাপন্নতা থেকে সুরক্ষা দেওয়া। প্রকল্পের গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্য হচ্ছে- উৎপাদনশীল কর্মকান্ড সৃষ্টির মাধ্যমে অধিকতর কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি এবং কর্মদক্ষতা বৃদ্ধি করা; হতদরিদ্র অবস্থা থেকে উত্তরণের একটি অগ্রণী “গ্রাজুয়েশন মডেল” সৃষ্টির মাধ্যমে বাংলাদেশের উপকূলীয়, মঙ্গা কবলিত ও  দারিদ্র্যপিড়ীত এলাকাগুলোর দুঃস্থ ও অসহায় নারীদের হতদরিদ্র অবস্থা থেকে বের করে আনা; ‘স্বপ্ন’ কে স্থায়ীত্বশীল প্রকল্প হিসাবে তৈরি করা এবং গ্রামীণ দারিদ্র্য বিমোচনে অবদান রাখা ও নারীদের উন্নয়নের মূলধারায় নিয়ে আসা; একটি সমন্বিত কৌশল গ্রহণ করা যা সরকারের দারিদ্র্য বিমোচন কৌশলপত্র বাস্তবায়নে অবদান রাখবে এবং সহ¯্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনে বাংলাদেশের অঙ্গীকারে তা প্রতিফলিত হবে।

সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক আবুল কাশেম মো: মহিউদ্দিন বলেন, সাতক্ষীরা উন্নয়নশীল জেলা হলেও এখানকার নারীরা অনেক পিছিয়ে রয়েছে। স্বপ্ন প্রকল্প নারীদের স্বপ্ন দেখেয়েছে। এই প্রকল্প নারীদের উন্নয়নে ভূমিকা রাখার পাশাপাশি জেলার উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রেখেছে। এই প্রকল্পের নারী উন্নয়নে সাতক্ষীরা ৬৪ জেলার মধ্যে মডেল হবে।

সম্মেলনে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন, স্বপ্ন প্রকল্পের জেলা ব্যবস্থাপক ও ইউএনডিপি কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম। বক্তব্য রাখেন সুশীলনের নির্বাহী পরিচালক মোস্তফা নুরুজ্জামান, জাতীয় প্রশিক্ষণ বিশেষজ্ঞ কাজল চট্টোপাধ্যায়, উন্নয়ন বিশেষজ্ঞ বেলায়েত হোসেন প্রমুখ।

স্বপ্ন প্রকল্পের উপকারভোগী কালিগঞ্জের নুরুন নাহার বলেন, স্বামীর মৃত্যুতে জীবন যখন থমকে দাঁড়ালা, তখন স্বপ্ন দেখালো স্বপ্ন প্রকল্প। এই প্রকল্পের মাধ্যমে নিজে ঘুরে দাঁড়াতে পেরেছি। আমার মেয়েকে রাজধানী উন্নয়ন কৃর্তপক্ষ (রাজউক) মডেল স্কুলে ভর্তি করেছি। আজকে আমি স্বাবলম্বী হয়েছি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.