কুলাউড়ায় পুকুর থেকে গৃহকর্মী দু’বোনের লাশ উদ্ধার, পরিকল্পিত হত্যার অভিযোগ

মৌলভীবাজার থেকে আজিজুল ইসলাম: মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার ভাটেরা ইউনিয়নের এক প্রবাসীর বাড়ির পুকুর থেকে মঙ্গলবার রাত আনুমানিক ১২টায় গৃহকর্মী দু’বোন হারিজা (১৮) ও ছফিনার (১৬) লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহতরা কমলগঞ্জ উপজেলার আদমপুর ইউনিয়নের আটকানি গ্রামের মৃত আকবর আলীর মেয়ে। নিহতদের মা ইয়ারুন বেগমের অভিযোগ তার মেয়েদের পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।

ভাটেরা স্থানীয় লোকজন ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ভাটেরা ইউনিয়নের হরিপুর গ্রামে কাতার প্রবাসী জয়নাল আবেদীনের পুকুর থেকে হারিজা ও ছফিনার লাশ উদ্ধার করা হয়। জয়নাল আবেদীনের বাড়িতে গৃহকর্মীর কাজ করত হারিজা। আর ছফিনা গৃহকর্মীর কাজ করতো জয়নাল আবেদীনের মেয়ের বাড়ি একই উপজেলার রাউৎগাঁও ইউনিয়নের ভবানীপুর গ্রামে। গত ৩ মে রোববার জয়নাল আবেদীনের মেয়ে জনির সাথে ছফিনা বেড়াতে আসে ভাটেরায়। মঙ্গলবার ২টায় জয়নাল আবেদীনের স্ত্রী জোছনা বেগমের সাথে হারিজা ও ছফিনা বাড়ির পুকুরে একসাথে গোসল করতে যায়। গোসল শেষে জোছনা বেগম বাড়িতে ফিরে গেলেও পুকুরে ছিলেন হারিজা ও ছফিনা। এরপর আর তারা বাড়িতে ফিরে না গেলে বিভিন্ন স্থানে খোঁজ করে পাওয়া যায়নি।

রাত আনুমানিক ১১টায় তাদের লাশ পুকুরে ভেসে উঠে। নিহত দু’বোন সাতার জানেনা বলে প্রবাসী জয়নাল আবেদীনের স্ত্রী জোছনা বেগম জানান। স্থানীয় ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মো. সিরাজ মিয়ার মাধ্যমে কুলাউড়া থানা পুলিশকে জানানো হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে দু’বোনের লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। নিহতদের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য বুধবার মৌলভীবাজার মর্গে পাঠানো হয়েছে।

নিহতদের মা ইয়ারুন বেগম অভিযোগ করেন, তার মেয়েরা সাতার জানেন। হারিজা আগেও জানিয়েছে তাকে নির্যাতনের কথা। আমার মেয়ে দুটোকে পরিকল্পিকভাবে হত্যা করা হয়েছে। রাতে মোবাইল ফোনে আমাকে জোছনা বেগম জানান, ‘’তোমার পুড়ি (মেয়ে) দুগো (দুই) পুকরিত পড়ি পানিত ডুবিয়া মরি গেছইন। জাল দি লাশ তোলা অইছে, ওতার লাশ নেও আইয়া’’।

ভাটেরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. সিরাজ মিয়া জানান, আমি শুধু খবরটা পুলিশকে জানিয়েছি। পুলিশ ঘটনাস্থলে আসার পর আমি এসেছি। তবে পুকুরে পানির নিচে পাকার কিছু নির্মিত পিলার আছে। সেখানে সাতার জানা মানুষও আটকে মারা যেতে পারে।

এ ব্যাপারে কুলাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো. মতিয়ার রহমান জানান, নিহতদের শরীরে আঘাতের কোনও চিহ্ন নেই। পানিতে পেট ফোলা। পানিতে ডুবে মারা যাওয়ার লক্ষণ। তারপরও মনের সন্দেহ দুর করতে ময়নাতদন্তের জন্য প্রেরণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় আপাতত অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে। তবে ময়নাতদন্ত রিপোর্টে যদি কোনও লক্ষণ পাওয়া যায় তবে পরবর্তীতে তা দেখা যাবে।