বাগেরহাট প্রতিনিধি: বাগেরহাটে সোনালী ব্যাংকের প্রধান শাখায় প্রায় সাড়ে চার কোটি টাকা আত্মসাতের মামলায় শেখ মুজিবর রহমান (৫৫) নামে সাবেক এক কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বৃহস্পতিবার রাতে খুলনা নগরীর নুরনগর এলাকা থেকে বাগেরহাট প্রধান শাখার সাবেক ব্যবস্থাপক শেখ মুজিবর রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়। শুক্রবার তাকে খুলনার সোনাডাঙ্গা মডেল থানায় সোপর্দ করা হয়েছে বলে দুদক জানিয়েছে। শেখ মুজিবর রহমান বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার বাইনতলা ইউনিয়নের চাকশ্রী গ্রামের প্রয়াত শেখ হাসান আলীর ছেলে।
বাগেরহাট মডেল থানার ওই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের (বাগেরহাট-খুলনা-সাতক্ষীরা) সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আবুল হাশেম কাজী বলেন, ২০১২ সাল থেকে ১৫ সাল পর্যন্ত বাগেরহাট শহরের রেলরোডে অবস্থিত সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপক থাকাকালে শেখ মুজিবর রহমান ও ওই ব্যাংকের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা শেখ মাহফিজুর রহমান বাবু ও আরেক কর্মকর্তাসহ অন্তত ১২ জন ব্যাংকগ্রাহক পরস্পর যোগসাজসে এ ঘটনা ঘটান। তারা সোনালী ব্যাংকের ১৫০ জন গ্রাহকের এসওডির বিপরীতে ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে তাদের হিসাব থেকে চার কোটি ৪৯ লাখ টাকা আত্মসাত করে।
২০১৫ সালের ৩ সেপ্টেম্বর সোনালী ব্যাংকের খুলনা আঞ্চলিক কার্যালয়ের অভ্যন্তরিণ অডিট নিরীক্ষাকালে সোনালী ব্যাংক বাগেরহাট প্রধান শাখার ওই অর্থ আত্মসাতের তথ্য ফাঁস হয়।
আবুল হাশেম কাজী বলেন, ২০১৫ সালের ১ অক্টোবর সোনালী ব্যাংকের ওই শাখায় নতুন যোগদান করা ব্যবস্থাপক খান বাবলুর রহমান বাদী হয়ে শাখার জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা শেখ মাহফিজুর রহমানের নাম উল্লেখ করে বাগেরহাট মডেল থানায় অর্থ আত্মসাত ও প্রতারণার অভিযোগে একটি মামলা করেন। ওই বছরের ২৪ ডিসেম্বর মামলার তদন্ত শুরু হয়। দুদকের প্রাথমিক তদন্তে টাকা আত্মসাতের প্রমাণ মিলেছে। এই আত্মসাতে ব্যাংকের তিন কর্মকর্তা ও ১২ জন গ্রাহকের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়। এদের সবার বিরুদ্ধে দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনে অভিযোগপত্র দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
অভিযোগের প্রমাণ মেলায় দুর্নীতি দমন কমিশনে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা চাওয়া হলে বৃহস্পতিবার কমিশন তাদের গ্রেপ্তারের আদেশ দেয়। আদেশ পেয়ে শেখ মুজিবর রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়। অন্যদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে তিনি জানান। আবুল হাশেম কাজী বলেন, তিন ব্যাংক কর্মকর্তার মধ্যে ব্যবস্থাপক শেখ মুজিবর রহমান ও জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা শেখ মাহফিজুর রহমান বাবুকে ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ সাময়িকভাবে বরখাস্ত করে। তবে অন্যজন এখনও চাকরিতে বহাল রয়েছেন বলে তিনি উল্লেখ করেন।