মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে বাংলাদেশ শিশু একাডেমি বাংলাদেশের ১৬টি জেলার ৪৫টি উপজেলায় ‘‘সমাজভিত্তিক সমন্বিত শিশুযত্ন কেন্দ্রের মাধ্যমে শিশুর প্রারম্ভিক বিকাশ ও সুরক্ষা এবং সাঁতার সুবিধা প্রদান (আইসিবিসি) প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। প্রকল্পটির বেজলাইন জরিপ ও নলেজ, অ্যাটিচুড ও প্রাকটিস এনালিসিস এর ফলাফল সংশ্লিষ্টদেরকে জানাতে সেমিনার আয়োজন করেছে সেন্টার ফর ইনজুরি প্রিভেনশন অ্যান্ড রিসার্চ, বাংলাদেশ (সিআইপিআরবি)। সার্বিক সহযোগিতায় ছিল বাংলাদেশ শিশু একাডেমি ও সিনারগোস বাংলাদেশ।
সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপদেষ্টা জনাব শারমিন এস. মুর্শিদ। নীতি নির্ধারক প্রতিনিধি, পানিতে ডুবা প্রতিরোধ কার্যক্রম বাস্তবায়নকারী প্রকল্পের প্রতিনিধি, উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার প্রতিনিধি, কমিউনিটি প্রতিনিধি, গণমাধ্যম প্রতিনিধি ও শিশুদের জন্য কাজ করে এমন দেশী এবং আন্তর্জাতিক বেসরকারী সংস্থার প্রতিনিধিগণ সেমিনারে অংশ নেন।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের যুগ্ম সচিব ও আইসিবিসি প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক জনাব মোঃ আব্দুল কাদির।
প্রধান অতিথি মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় উপদেষ্টা শারমিন এস. মুর্শিদ, তাঁর বক্তব্যে বলেন, শিশুদের সার্বিক কল্যাণ সরকারের অন্যতম লক্ষ্য যা পূরণে আইসিবিসি প্রকল্পের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই প্রকল্প অন্যান্য বড় প্রকল্পের জন্য অন্যন্য উদাহরণ হয়ে থাকবে; কেননা এর মাধ্যমে সুরক্ষিত পরিবেশে শিশুদের বিকশিত হবার পরিবেশ নিশ্চিত করা হচ্ছে। যেসব জেলার শিশুরা এই প্রকল্পের আওতার বাইরে আছে তাদেরকে কিভাবে নিরাপদ রাখা যায় সে ব্যাপারে উদ্যোগ নেয়ার তাগিদ দেন তিনি।
বিশেষ অতিথি জনাব মমতাজ আহমেদ সিনিয়র সচিব মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় তাঁর বক্তব্যে বলেন,জাতির ভবিষ্যৎ প্রজন্মের সুরক্ষিত জীবন গড়তে আইসিবিসি প্রকল্প চলমান থাকা এবং সারা দেশে ছড়িয়ে দেয়া জরুরি।
কান্ট্রি ডাইরেক্টর, সিনারগোস বাংলাদশ এষা হোসেন, বলেন, আইসিবিসি প্রকল্প সরকারি ও বেসরকারি উদ্যগের কার্যকরী মেলবন্ধন। তিনি প্রকল্পটির এ পর্যন্ত অর্জিত বিভিন্ন সাফল্য তুলে ধরে এর দ্বিতীয় পর্যায়ে বাস্তবায়িত হওয়ার প্রয়োজনীয়তা বিষয়ে সুপারিশ করেন।
কেলি লারসন পরিচালক- জনস্বাস্থ্য বিভাগ ব্লুমবার্গ ফিলানথ্রপিস বলেন, সরকারের প্রচেষ্টা ও সহযোগিতায় সংশ্লিষ্ট সকল প্রতিষ্ঠান একযোগে কাজ করলে শিশু সুরক্ষা বিষয়ক কার্যক্রমগুলোর সক্ষমতা বাড়বে। শিশুদের নিরাপত্তায় সরকারী এই উদ্যোগে সহায়তা করতে পেরে ব্লুমবার্গ ফিলানথ্রপিস কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছে।
ড. মনজুর আহমেদ বলেন, শিশুদের সুন্দর ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে আইসিবিসি প্রকল্প অন্যতম ফলপ্রসূ সমবেত পদক্ষেপ। শিশু বিকাশে কর্মরত প্রতিষ্ঠানসমূহকে সঠিক দিক-নির্দেশনা দিতে সামগ্রিক শিশু বিকাশ নীতিমালা থাকা অত্যন্ত প্রয়োজন। এ লক্ষ্যে তিনি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
সেমিনারে মুল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন, ড. আমিনুর রহমান, উপ-নির্বাহী পরিচালক, সিআইপিআরবি। তিনি শিশুযত্ন সম্পর্কে তার প্রধান যত্নকারীর জ্ঞান, মনোভাব ও আচরণ যাচাই সংক্রান্ত ফলাফল তুলে ধরেন। যার মধ্যে রয়েছে শিশুদের সুষ্ঠুভাবে দেখাশোনা করা, সুস্বাস্থ্য, পর্যাপ্ত পুষ্টি, নিরাপত্তা ও সুরক্ষাসহ শিশুদের পানিতে ডোবা ও অন্যান্য ইনজুরীতে মৃত্যুর সার্বিক অবস্থা ইত্যাদি । এসকল বিষয়ে উন্নতি সাধনের জন্য কার্যকরী পদ্ধতিসমূহ নিয়েও উপস্থাপনায় আলোচনা করা হয়।
বাংলাদেশ শিশু একাডেমির মহাপরিচালক ও মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের যুগ্ম সচিব জনাব দিলারা বেগম অনুষ্ঠানের সমাপনী বক্তব্য প্রদান করেন। একই সাথে অনুষ্ঠানে অংশ নেয়া অতিথিদের সুপারিশমালা প্রকল্পকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার পাথেয় হিসেবে কাজ করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। এ লক্ষ্যে তিনি সংশ্লিষ্ট সকল প্রতিষ্ঠানের কাছে আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করেন।