খনির পরিত্যক্ত ডেটোনেটর বিস্ফোরণে শিশুর কবজি বিচ্ছিন্ন

প্রতিনিধি, পার্বতীপুর (দিনাজপুর) :কয়লা খনির পরিত্যক্ত ডেটোনেটর বিস্ফোরণে ইলিয়াস আলী নামের ১০ বছরের এক শিশুর ডান হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।

মঙ্গলবার (৮ জুলাই) দুপুর ১২টার দিকে খনি-সংলগ্ন চৌহাটি গ্রামে এ দুর্ঘটনা ঘটে। ইলিয়াস চৌহাটি গ্রামের আশরাফুল ইসলামের ছেলে এবং স্থানীয় একটি মাদ্রাসার শিক্ষার্থী।

স্থানীয়রা জানায়, দুপুরে কয়লা খনির ডাম্পিং এলাকা থেকে একটি ধাতব বস্তু কুড়িয়ে বাড়িতে নিয়ে আসে ইলিয়াস। পরে তা মোবাইল ফোনের নষ্ট ব্যাটারির সঙ্গে সংযুক্ত করলে ভয়াবহ শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। এতে তার ডান হাতের কবজি ছিন্ন হয়ে যায় এবং শরীরের বিভিন্ন অংশ জখম হয়।

পরিবারের সদস্যরা দ্রুত তাকে ফুলবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। পরে অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় তাকে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

কয়লা খনির প্রাচীরসংলগ্ন কাঁটাতারে ঘেরা ডাম্পিং এলাকায় খনির বিভিন্ন বর্জ্য ফেলা হয়। স্থানীয়রা সেখানে গিয়ে কয়লার সন্ধানে ধাতব বস্তু কুড়িয়ে আনে। এ ধরনের বর্জ্যের মধ্যেই অনেক সময় মেলে পরিত্যক্ত বিস্ফোরক ডিভাইস। চৌহাটি গ্রামের অনেক বাসিন্দা এগুলোর ঝুঁকি সম্পর্কে না জেনেই বাড়িতে এনে রাখেন।

খনির এক ভূগর্ভস্থ শ্রমিক জানান, এসব ডিভাইস হলো ডেটোনেটর, যা ভূগর্ভে মেশিন দিয়ে কয়লা উত্তোলন সম্ভব না হলে বিস্ফোরণের মাধ্যমে কয়লা সংগ্রহ করতে ব্যবহৃত হয়।

ঘটনার পর এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয়দের অভিযোগ, কয়লা খনি এলাকার পুরোনো বিস্ফোরক দ্রব্য দ্রুত অপসারণে কর্তৃপক্ষের পর্যাপ্ত তৎপরতা নেই।

বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির মহাব্যবস্থাপক (মাইন অপারেশন) খান মো. জাফর সাদিক বলেন, “এটি একটি ডেটোনেটর, যা খনির অভ্যন্তরে কয়লা উত্তোলনে ব্যবহৃত হয়। এগুলো খুবই স্পর্শকাতর; কোনটি অকেজো আর কোনটি সক্রিয় তা সাধারণ মানুষ বুঝতে পারে না। ডাম্পিং এলাকা থেকেই হয়তো এটি সংগ্রহ করা হয়েছে। ঘটনাটি আমাদের জানা ছিল না, তবে এখন আমরা বিষয়টি নিয়ে কাজ করছি।”

আহত শিশুর বিষয়ে তিনি বলেন, “প্রথমে তার চিকিৎসা নিশ্চিত করা হচ্ছে। পরে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি কর্তৃপক্ষ তার পাশে থাকবে এবং প্রয়োজনীয় সহায়তা দেবে।”