গফরগাঁওয়ে ৩ সপ্তাহে শতাধিক গরু চুরি, বিক্ষুব্ধ কৃষকদের থানা ঘেরাও

আতাউর রহমান মিন্টু, গফরগাঁও (ময়মনসিংহ): কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে গফরগাঁও উপজেলায় গত তিন সপ্তাহে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে শতাধিক গরু চুরি হয়েছে। এসব গরুর  আনুমানিক মূল্য প্রায় ৩০ লাখ টাকা।

gafargaon cattle stolen
গরু চুরি বন্ধে এলাকাবাসীর বিক্ষোভ মিছিল।

এ নিয়ে গত সপ্তাহে উপজেলা আইনশৃঙ্খখলা কমিটির সভায় তীব্র ক্ষোভ ও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরা। গরু চুরি বন্ধে থানা-পুলিশের সহযোগিতা না পেয়ে শুক্রবার সকালে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী গফরগাঁও থানা ঘেরাও করে এবং উপজেলা সদরে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। গরু চুরির মামলার আসামিরা প্রকাশ্যে ঘোরাফেরা করলেও রহস্যজনক কারণে পুলিশ তাদের গ্রেফতার না করায় এলাকাবাসী নিজেরাই তাদের আটক করে  পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, গফরগাঁও থানার চরআলগী ইউনিয়নের চরমছলন্দ মাইজপাড়া গ্রামের আব্দুল হামিদের ও সুলতানের তিনটি করে এবং ফকরুল, নিজাম, কাছু মিয়া, জোছনা, রশিদ ও ফালানের দুটি করে গরু চুরি হয়। এছাড়া রসুলপুর ইউনিয়নে এক রাতে পাঁচটি, গফরগাঁও ইউনিয়নের হাতিখলা, আউটবাড়িয়া, পড়শীপাড়া গ্রামে তিনটি,পাগলা থানার পাইথল গ্রামে এক রাতে সাতটি, পাচঁবাগ ইউনিয়নের চরশাখচূড়া গ্রামের দুটি, দিঘীরপাড় গ্রামে একটিসহ গত তিন সপ্তাহে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে প্রায় শতাধিক গরু চুরির ঘটনা ঘটেছে।

এসব গ্রামের মানুষ গরু চুরি রোধে রাত জেগে গোয়ারঘর পাহারা দিচ্ছে। তাতেও বন্ধ হচ্ছে না চুরি। সংঘবদ্ধ চোরের দল কৌশলে গরু চুরি করেই যাচ্ছে। গরু চুরি বন্ধে থানা-পুলিশ নির্বিকার।

গত ৩১ আগস্ট সোমবার উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় একাধিক ইউপি চেয়ারম্যান গরু চুরি বন্ধে থানা-পুলিশের ভূমিকায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তারা গরু চুরি বন্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য পুলিশের কাছে দাবি জানান।

বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার দুগাছিয়া গ্রামে গরু চুরির সময় জনতার হাতে আটক হয় দীন ইসলাম (৩৬), বেলাল (৩৮)ও সবজুল (৩৬) নামে তিন গরু চোর। এর মধ্যে বেলাল চরমছলন্দ মাইজপাড়া আবদুল মজিদের তিনটি গরু চুরির মামলার প্রধান আসামি। এদিকে গরু চুরি বন্ধে থানা পুলিশের সহযোগিতা না পেয়ে কয়েকশ’ কৃষক শুক্রবার সকাল ১১টার দিকে উপজেলা সদরে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। পরে তারা গরু চুরি বন্ধের দাবিতে থানা ঘেরাও করে।

চরআলগী ইউপির মেম্বার  সুলতানা রাজিয়া বলেন, প্রতিদিন কোনো না কোনো বাড়িতে গরু চুরির ঘটনা ঘটছে। একের পর একর গরু চুরির ঘটনায় থানায় অভিযোগ দিয়েও কোনো প্রতিকার পাওয়া যায় না। বাধ্য হয়েই এলাকাবাসী থানা ঘেরাও করেছে।

গফরগাঁও থানার ওসি আবু ওবায়দা বলেন, চরআলগী ইউনিয়নে গরু চুরির ঘটনায় দুটি মামলা হয়েছে। এছাড়া গরু চুরির কোনো তথ্য নেই।
এ ব্যাপারে উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সদস্য সচিব ও উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা সিদ্ধার্থ শংকর কুন্ডু বলেন, গরু চুরি বন্ধে প্রতিটি ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে চেয়ারম্যানদের মিটিং করতে বলা হয়েছে।