সুদকারবারিদের চাপ সইতে না পেরে আত্মহনন করলেন ভাস্কর রামকৃষ্ণ

প্রতিনিধি, বাগেরহাট: বাগেরহাটের চিতলমারীতে সুদকারবারিদের অত্যাচার ও হুমকির মুখে আজ রোববার দুপুরে রামকৃষ্ণ মালাকার (৫৫) নামে এক ভাস্কর্য শিল্পী আত্মহত্যা করেছেন। এ ঘটনায় এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠিয়েছে। রামকৃষ্ণের মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

পুলিশ ও নিহতের পরিবার জানায়, উপজেলার কালশিরা গ্রামের হরিপদ মালাকারের ছেলে অজয় মালাকার বছর খানেক আগে ক্যানসারে আক্রান্ত হন। তখন এক পর্যায়ে নিরূপায় হয়ে চিকিৎসার জন্য এলাকার কিছু সুদকারবারীর কাছ থেকে সুদে টাকা আনেন। এ অবস্থায় তিনি ভারতে চিকিৎসা নিতে গেলে এসব সুদকারবারিরা তার বড়ভাই রামকৃষ্ণ মালাকারের ওপর এ টাকার জন্য চাপ দেন। তিনি বাড়ির বাস্তুভিটা বাদে সমস্ত জমি-জায়গা বিক্রি করে ভাইয়ের দেনা পরিশোধ করলেও এসব লোকজন আরো টাকা দাবি করে। এ টাকার জন্য বাস্তুভিটা লিখে দিতে চাপ দেয় তারা। নইলে তাকে নানা ধরনের ভয়-ভীতি প্রদর্শনসহ বাড়ি থেকে তুলে নেওয়ার হুমকি দেয়।

bagerhat suicide
রামকৃষ্ণের স্ত্রীর আহাজারি।

হুমকির মুখে রবিবার দুপুরের সকলের অলক্ষ্যে দিকে ঘরের আড়ায় গলায় ফাঁস লাগিয়ে রামকৃষ্ণ মালাকার আত্মহত্যা করেন। বাড়ির লোকজন ঘরের আড়ায় তার লাশ ঝুলতে দেখে পুলিশকে খবর দেন। খবর পেয়ে থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে মর্গে প্রেরণ করে।

নিহতের কন্যা বিথী মালাকার জানান, গত  কয়েকদিন ধরে উপজেলার বারাশিয়া গ্রামের সবুর শেখ, হানিফ শেখ, রফিক শেখ, মনোতোষ বালাসহ কয়েকজন তার বাবাকে সুদের টাকার জন্য হুমকি দিয়ে আসছে। এসব লোকজনের হুমকির কারণে তার বাবা আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন বলে অভিযোগ তোলেন। বিথী শেরেবাংলা মহাবিদ্যালযের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। এসব সুুদকারবারিদের হুমকির মুখে তিনি ঠিকমতো কলেজে যেতে পারছেনা না বলেও জানান।

এ ব্যাপারে চিতলমারী থানার ওসি মো. ইকবাল বাহার চৌধুরী জানান, দেনার দায়ে আত্মহত্যার বিষয়টি জানা গেছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। লাশ উদ্ধার করে মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। পুলিশ সুপার নিজামুল হক মোল্লা জানান, সুদকারবারীরা তাকে আত্মহত্যায় প্ররোচিত করলে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.