ইউএনওর জন্য ইয়াবা-ফেনসিডিল বইছিল যুবক!

রতন সিং, দিনাজপুর: দিনাজপুরের বীরগঞ্জে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বাসায় নিয়ে যাওয়ার পথে ইয়াবা ট্যাবলেট ও ফেনসিডিলসহ এক যুবককে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। এই ঘটনায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসককে (সার্বিক) তদন্ত করে সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।

বীরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ জাহাঙ্গীর আলম জানান, আজ সকালে বীরগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান মো. আমিনুল ইসলামের কাছে খবর পেয়ে তিনি ছয়টি ইয়াবা ও ফেনসিডিলসহ যুবককে আটক করে থানায় নিয়ে আসেন। আটক যুবকের নাম মেহেদি হাসান রবিন (২৮)। তিনি বগুড়া সদর উপজেলার নিশিধারা গ্রামের মোফাজ্জল হোসেনের ছেলে।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রবিন স্বীকার করে যে, তিনি গত ছয় মাস ধরে বীরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাসেল মনজুরকে ইয়াবা ট্যাবলেট ও ফেনসিডিল সরবরাহ করে আসছেন। ইউএনও রাসেল মনজুরের চাহিদা অনুযায়ী ছয়টি ট্যাবলেট ও পেপসির বোতলে ভরে দুই বোতল ফেনসিডিল গতকাল বুধবার দিবাগত রাত পৌনে ৪টায় বাসে করে নিয়ে এসে বীরগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সামনে নামেন তিনি। সন্দেহ হলে কয়েকজন যুবক তাকে আটক করলে তিনি ঘটনা স্বীকার করে। তাকে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় তাকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। এ ব্যাপারে বীরগঞ্জের সুজালপুর গ্রামের সাঈদ সিদ্দিকী মিলন বাদী হয়ে থানায় মাদক আইনে একটি মামলা দায়ের করেন।

বিকেলে আটক আসামিকে দিনাজপুর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচদিনের রিমান্ডের চেয়েছে পুলিশ। বিচারক আগামী ২০ সেপ্টেম্বর রিমান্ড শুনানির জন্য দিন ধার্য করে রবিনকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

এ ব্যাপারে বীরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাসেল মনজুরের নিকট জানতে চাওয়া হলে তিনি ঘটনাএ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। তবে আটক যুবকের মুঠোফোন (০১৯১৯-৭০১০২৫) নম্বর থেকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সরকারি নম্বরে (০১৭৬১-৪৯৩৫২৮) ঘটনার সময় একাধিকবার কথোপকথন হয়েছে। এসব আলাপের রেকর্ডের বিষয়েও তিনি কোনো মন্তব্য করেননি। রাসেল মঞ্জুর এ বিষয়ে খবর না প্রকাশ করার জন্য বার বার অনুরোধ করেন।

বীরগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান মো. আমিনুল ইসলাম জানান, জনগণ ইয়াবা ও ফেনসিডিলসহ আটক যুবককে তার নিকট নিয়ে আসলে তিনি দিনাজপুর জেলা প্রশাসক ও দিনাজপুর ১ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য মনোরঞ্জনশীল গোপালকে বিষয়টি অবহিত করেন। তাদের নির্দেশেই আটক যুবককে থানায় সোপর্দ করা হয়।

দিনাজপুর জেলা প্রশাসক মীর খায়রুল আলম জানান, এই ঘটনার তদন্তের পর দোষী যেই ব্যক্তি হোক তাকে আইনের আওতায় আনা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.