প্রতিনিধি, বাগেরহাট: ‘শেখ হাসিনা ঠিকই দেয়, পাতিনেতারা কেড়ে নেয়, ওগো জন্যি যত বদনাম’। বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার ভিজিডি সুবিধাভোগী অস্বচ্ছল নারী রেনু বেগম ৩০ কেজির বদলে ২৩ কেজি চাল পেয়ে এভাবেই তার ক্ষোভের কথা জানান।
মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় ১৮ থেকে ৪৫ বছর বয়সী হতদরিদ্র, অসহায় ও অস্বচ্ছল নারীদের প্রতিমাসে ৩০ কেজি করে চাল দেয়। মঙ্গলবার হোগলাবুনিয়া ইউনিয়নের ১৯৯টি পরিবারের মাঝে বিতরণ করা হয়। ইউনিয়ন পরিষদ থেকে জনপ্রতি এক বস্তা চাল দেয়া হয়। খাদ্য অধিদপ্তরের ওই বস্তায় লেখা রয়েছে ৩০ কেজি। কিন্তু সুবিধাভোগীরা পরিষদের বাইরে গিয়ে ডিজিটাল মাপযন্ত্রে তুলে দেখেন বস্তায় আছে মাত্র ২৩ কেজি চাল। বস্তাসহ ওজন ২৩ কেজি ৩০০ গ্রাম। এভাবে প্রায় দেড় টন চাল কম পান তারা।
এ অবস্থা দেখে সুবিধাভোগীরা ক্ষুব্ধ হন। প্রতিবাদ করলে তালিকা থেকে নাম বাদ পড়বে। অন্যান্য রাষ্ট্রীয় সুবিধা থেকেও বঞ্চিত হতে হবে এই ভয়ে অনেকে নীরব। নির্বাচন আসন্ন তাই অনেকে মুখ খুলছেন। ন্যায্য পাওনাটুকু পেতে চান তারা।
ক্ষুব্ধ সুবিধাভোগীরা এই ঘটনাটি স্থানীয় সংসদ সদস্য ডা. মোজাম্মেল হোসেনকেও জানিয়েছেন। তিনি বলেন, হতদরিদ্রদের ন্যায্য অধিকার শতভাগ বুঝিয়ে দিতে হবে। উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ও আওয়ামী লীগ সহ-সভাপতি মো. লিয়াকত আলী খানও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, তৃণমূল পর্যায়ের কিছু অসঙ্গতির কারণে সরকারের দুর্নাম হচ্ছে। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ ওবায়দুর রহমান বুধবার বলেন, চাল কম দেওয়ার ঘটনাটি শুনেছি। সংশ্লিষ্ট ট্যাগ অফিসারকে সতর্ক করেছি এবং খতিয়েও দেখা হবে।
ভিজিডির চাল বিতরণের সময় ইউনিয়ন ট্যাগ অফিসার উপজেলা কৃষিকর্মকর্তা অনুপম রায় উপস্থিত ছিলেন না। তিনি ছুটিতে আছেন। তার পক্ষে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মিজানুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
বস্তায় চাল কম কেন জানতে চাইলে ইউনিয়ন চেয়ারম্যান উপজেলা আওয়ামী লীগ সহ-সভাপতি আলহাজ ছরোয়ার হোসেন বলেন, কয়েক দফা ওঠানামা করায় বস্তা থেকে চাল পড়ে কমে যায়। অনেক বস্তা ছেড়া থাকে। আবার ইঁদুরে বস্তা কেটে ফেলায় অনেক বস্তা থেকে চাল পড়ে গেছে। যারা বস্তায় চাল কম পেয়েছে তাদেরকে ডেকে বাকি চাল দিয়ে দেওয়া হবে বলে জানান।