মো. মাহবুবুল আলম মিন্টু, রায়পুর (লক্ষ্মীপুর): রায়পুর উপজেলার উত্তর চর আবাবিল ইউনিয়ন যুবলীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মনু মিয়া হত্যা মামলার অভিযুক্ত আসামিরা এলাকায় এসে আবারও ত্রাস ছড়াতে চাচ্ছে। তারা মামলার বাদী ও সাক্ষীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তাদের হুমকি দিচ্ছে। বাদী ও সাক্ষীর বাড়িতে ঢিল নিক্ষেপ এবং ভাঙচুরের চেষ্টাও চালায় তারা।
আজ (২৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সাংবাদিকদের কাছে এসব অভিযোগ করেছেন ওই হত্যা মামলার বাদী মো. নাদিম ও সাক্ষী মো. শুকুরসহ আরো কয়েকজন। এ ঘটনায় তারা আতঙ্কিত বলে জানিয়েছেন। এ নিয়ে সন্ধ্যায় রায়পুর থানায় জিডি করেছেন বলে জানিয়েছেন।
হত্যা মামলার আসামি আক্তার হোসেন ওরফে চোরা আক্তার (৩৫), আনোয়ার হোসেন ওরফে আনা বয়াতী (৩৭), ফয়সাল ঢালী (২৬), ফারুক (৩০) ও সাফু সওদাগর (৪০) কারাগার থেকে জামিনে বেরিয়ে এলাকায় এসে মঙ্গলবার বিকেলে ও বুধবার সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটায় বলে নাদিম দাবি করেছেন।
যুবলীগ নেতা নাদিম জানান, জামিনে এসে আসামিরা দু’দফায় তার ও পরিবারের সদস্যদের ওপর হামলার চেষ্টা চালায়। চর আবাবিল গ্রামের (হায়দরগঞ্জ) তার বসতঘরটি ভেঙে ফেলায় তিনি এখন শ্বশুরের ঘরে বসবাস করেন। সেখানেও ঘরের বেড়ায় পিটিয়ে ও ঢিল ছুড়ে আতঙ্ক ছড়ায়। সাক্ষী শুকুরের বাড়িতেও চড়াও হয় আসামিরা। সাক্ষী ও নাদিমকে তারা এই বলে প্রকাশ্য হুমকি দিচ্ছে: সে যদি মামলা প্রত্যাহার না করে তবে তাকেও তার মামা যুবলীগ নেতা মনু মিয়ার মতো হত্যা করে লাশ গুম করে ফেলবে। সাক্ষীদের শাসাচ্ছে তারা যেনো ভবিষ্যতে কখনো এ মামলায় সাক্ষ্য দিতে আদালতে না যায়। যদি কেউ সাক্ষ্য দেয় বা বাদীর সঙ্গে যোগাযোগ রাখে তবে তাদেরকে কঠোর পরিণতি ভোগ করার হুমকি দেয়।
অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানার চেষ্টা করেও আসামিদের কাউকে না পাওয়া যাওয়ায় তাদের বক্তব্য জানা যায়নি।
হায়দরগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ঘটনাটি আমি অবগত নই। বিষয়টি যাচাই করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উল্লেখ্য, ১৩ মার্চ পূর্ব বিরোধের জের ধরে চর আবাবিল ইউনিয়নের হায়দরগঞ্জ বাজারে প্রকাশ্য দিবালোকে চর আবাবিল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা সহিদ উল্যা বিএসসির পুত্র মনজুর হোসেন সুমন ও তার লোকজন মনুকে কুপিয়ে এবং পিটিয়ে গুরুতর জখম করলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৬ মার্চ মনুর মৃত্যু হয়।

ওই ঘটনায় মনুর ভাগ্নে মো. নাদিম বাদী হয়ে মামলা (মামলা নং-১৪, তাং-১৪/০৩/২০১৫) করেছিলেন। হায়দরগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মো. রফিকুল ইসলাম ১২ জুন আদালতে মামলার চার্জশিট জমা দেন। চার্জশিটে মনজুর হোসেন সুমন (৩৮), আনোয়ার হোসেন ওরফে লিটন কেরানী (৩৮), আনোয়ার হোসেন আনা বয়াতী (৩৭), জসিম বয়াতী (৩০), আক্তার হোসেন ওরফে আক্তার চোরা (৩৫), মো. বাছেদ (৪০), মনির হোসেন (২৮), সফি উল্যা সওদাগর ওরফে সাফু বেপারী (৪০), ফয়সাল (২৬), মো. ফারুক বেপারী (৩৮), আলম বয়াতী (৪০) বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়।