হিন্দুদের ভিটেছাড়া করতে বাড়ির সামনে গরুর মাংসের দোকান, হত্যার হুমকি

প্রতিনিধি, দিনাজপুর: হিন্দু পরিবারের জমি নিজের দখলে নিতে হিন্দুবাড়ির সামনে গরুর দোকান বসিয়েছেন এক প্রভাবশালী। এর আগে হিন্দু পরিবারটিকে হত্যাসহ নানা হুমকিও দেয়া হয়। এরকম স্পর্শকাতর চাল ও ক্রমাগত হুমকিতে বড় ধরনের বিপত্তিতে পড়েছে ওই পরিবার। নিরাপত্তাহীনতা আর অস্বস্তির মধ্যে দিন কাটছে তাদের।

এ ঘটনা দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলার মন্মথপুর ইউনিয়নের দাগলাগঞ্জ বাজারের।

butcher shop in front of hindu family house
ঠাকুরবাড়ির ঠিক সামনেই ষড়যন্ত্র করে বসানো হয়েছে গরুর মাংসের দোকান।

জানা গেছে, ওই বাজারে একই পরিবারের রাম প্রসাদ ঠাকুর ও সন্তোষ প্রসাদ ঠাকুর নিজেদের জমিতে রাস্তা লাগোয়া প্রান্তে বাড়ি তুলে বসবাস করে আসছেন। বাড়িতে তাদের দখলে পৈতৃক সম্পত্তির মোট পরিমাণ যথাক্রমে ৬৪ ও ৮৭ শতাংশ।

কিন্তু কাজী কুতুব উদ্দিন নামের এক প্রভাবশালী এই দুই পরিবারের ৫০ শতাংশ জমি জোর করে দখল করে নেন। এ নিয়ে মামলা হলে ২০০৯ সালে রাম প্রসাদ ও সন্তোষ প্রসাদের পক্ষে রায় দেন আদালত। কিন্তু আদালতের রায়ের পরও জমির দখল ছাড়ছেন না ওই প্রভাবশালী। কুতুব উদ্দিন পরিবার দুটিকে উৎখাত করতে তাদের বাড়ির প্রধান ফটকের সামনে মাত্র ১০ গজ ব্যবধানে গরুর মাংসের দোকান বসিয়েছেন।

রাম প্রসাদ ও সন্তোষ প্রসাদ অভিযোগ করে বলেন, এলাকার গণমান্য ব্যক্তিসহ স্থানীয় ইউপি সদস্য ও চেয়ারম্যান তাকে কুতুবকে দখল ছেড়ে দিয়ে মাংসের দোকান সরানোর নির্দেশ দিলেও তিনি তা গ্রাহ্য করছেন না। কুতুব জোর করে তাদের জমির মাটি, বাঁশ ও গাছ-পালা কেটে নিয়ে যাচ্ছেন। প্রতিনিয়ত হুমকি দিচ্ছে– তোরা জমি ও বাড়ি ছেড়ে দিয়ে ভারতে চলে যা। তাদের প্রাণনাশের ধমকও দিয়েছেন কুতুব।

পরিবার দুটির সদস্যরা সব সময় আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।

এসব বিষয়ে কাজী কুতুব উদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

মন্মথপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. ওয়াদুদ শাহ্ জানান, বিষয়টি নিয়ে বহুবার বৈঠক হয়েছে। কিন্তু কাজী কুতুব উদ্দিন কোনো কর্ণপাত করেননি। তাই তাদেরকে আইনের আশ্রয় নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার তরফদার মাহমুদুর রহমান বলেন, বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বলা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.