প্রতিনিধি, কিশোরগঞ্জ: কিশোরগঞ্জের স্কুলছাত্রী স্মৃতি আক্তারকে কুপিয়ে আহত করার প্রধান আসামি তৌহিদ (২০) আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।
তৌহিদকে বুধবার সদর জুডিশিয়াল ম্যাজিসেট্রট আদালতে হাজির করা হলে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আলাউল আকবরের কাছে হামলার কথা স্বীকার করে বিস্তারিত বিবরণ দেয় তৌহিদ।
স্মৃতির ওপর হামলার উদ্দেশ্যে তৌহিদ শনিবার গাজীপুরের কোনাবাড়ি থেকে দা ও বটি কিনেছিল বলে আদালতকে জানায়।
জবানবন্দি রেকর্ড করার পর তৌহিদকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
মঙ্গলবার সকালে পাকুন্দিয়া উপজেলার কুমড়ি গ্রাম থেকে পাকুন্দিয়া থানাধীন আহুতিয়া তদন্ত কেন্দ্রের এসআই মতিউর রহমান কুমড়ি গ্রামের এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে তৌহিদকে গ্রেফতার করেন।
সদর উপজেলার পনকলিমা গ্রামে মামার বাড়িতে থেকে মৃত হেলাল উদ্দিনের মেয়ে স্মৃতি আক্তার নান্দলা অছমউদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ে দশম শ্রেণিতে পড়াশোনা করছে। একই গ্রামের হুমায়ুন মিয়ার ছেলে তৌহিদ ঢাকায় একটি জুতার কারখানায় কাজ করে। সে অনেকদিন ধরে স্মৃতিকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে উত্যক্ত করে আসছিল। স্মৃতি বরাবরই এ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে।
রোববার (১৯ অক্টোবর) সকালে টেস্ট পরীক্ষা দিতে যাওয়ার সময় স্কুলের কাছে বটি-দা দিয়ে স্মৃতিকে আক্রমণ করে তৌহিদ ও তার সহযোগীরা। দা দিয়ে মাথা, ঘাড় ও বাহুতে কুপিয়ে মারাত্মক আহত করে পালিয়ে যায় তারা। মুমূর্ষু অবস্থায় স্মৃতিকে প্রথমে কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখান থেকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে তার অস্ত্রোপচার হয়েছে। প্রচুর রক্তক্ষরণের কারণে বেশ কয়েকবার তাকে রক্ত দিতে হয়েছে।
তবে এখন তার অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছে বলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আমিনুল হক জানিয়েছেন।
স্মৃতির মামা আব্দুল কাইয়ুম বাদী হয়ে তৌহিদ ও তার বাবা হুমায়ুন মিয়া ও মা ঝরণা আক্তার, সহযোগী মামুন, সাইকুল ও সাদ্দাম নামে ছয় জনকে আসামি করে সদর থানায় রোববার মামলা করেন।
ঘটনার দিনই তৌহিদের সহযোগী পনকলিমা গ্রামের মেনু মিয়ার ছেলে মামুনকে (১৯) গ্রেফতার করা হয়। মঙ্গলবার সকালে প্রধান আসামি তৌহিদকে গ্রেফতার করা হয়। অন্য আসামিদের গ্রেফতারেও অভিযান অব্যাহত আছে বলে ওসি মীর মোশারফ হোসেন জানিয়েছেন।