রবিউল হাসান রবিন, কাউখালী(পিরোজপুর): ধর্মগুরু দুর্গাপ্রসন্ন পরমহংসদেবের ১২৪তম আবির্ভাবতিথি উপলক্ষে বৃহস্পতিবার পিরোজপুরের কাউখালীতে শ্রী গুরু সংঘ বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় আশ্রমের পাঁচ দিন ব্যাপী বার্ষিক উৎসব শুরু হয়েছে।
প্রতিবছর রাস পূর্ণিমায় শ্রী গুরু সংঘের প্রতিষ্ঠাতা দুর্গাপ্রসন্ন পরমহংসদেবের আবির্ভাবতিথি উদযাপন করা হয়।
পাঁচ দিনের এ উৎসবকে ঘিরে দেশে-বিদেশের লক্ষাধিক ভক্ত ও পুণ্যার্থী জড়ো হয়েছেন কাউখালীতে।
শ্রী গুরু সংঘের সভাপতি স্বামী জগন্নাথ আনন্দ স্বরস্বতী বৃহস্পতিবার সকালে আশ্রম অঙ্গনে সংঘ পতাকা উত্তোলন করে অনুষ্ঠানের সূচনা করেন। পরে সত্য, সেবা, নীতি, ধর্ম–জীবনের চার কর্ম সামনে রেখে সংঘের সাধারণ সম্পাদক রনঞ্জয় কৃষ্ণ দত্তের নেতৃত্বে একটি শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রাটি শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
উৎসবে প্রতিবছরের মতো আশ্রম প্রাঙ্গণে বিশাল এলাকা জুড়ে বসেছে রাস মেলা। নাগরদোলাসহ রকমারি জিনিসের পসরা সাজিয়েছে দোকানিরা। পাহাড়ি কাঠের নকশায় গড়া আকর্ষণীয় আসবাব নিয়ে দূরদূরান্ত থেকে দোকানিরা এসেছে মেলায়। শীতের কাপড়, শিশুদের খেলনা সামগ্রীতে জমে উঠেছে এ আনন্দমেলা।
উৎসবের তথ্য ও প্রচার কমিটির আহ্বায়ক সুব্রত রায় জানান, দুঃখ বিমোচন, অধর্মের গ্লানি থেকে রক্ষা ও ধর্ম সংস্থাপণার্থে বিশ্ব শান্তি কামনায় পাঁচদিন ব্যাপী এ উৎসবে ২৪ ঘণ্টা তারকব্রহ্ম মহানাম সংকীর্তন অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া মঙ্গল আরতি, গীতা পাঠ, বস্ত্র বিতরণ, হাসপাতালে দুস্থ রোগীদের মধ্যে ফল বিতরণ, সান্ধ্য প্রার্থনা ও ধর্ম সভাসহ নানা কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে।
আগামী ৩০ নভেম্বর সমাপনী দিনের মহোৎসবে কুঞ্জভঙ্গ, কীর্তনসহ বিভিন্ন আচার-অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে উৎসবের সমাপ্তি ঘটবে।
উৎসবে জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে প্রায় লক্ষাধিক মানুষের সমাগম ঘটেছে। ভারত, নেপাল ও শ্রীলংকা থেকেও ভক্তরা এ অনুষ্ঠানে সমবেত হয়েছেন।
শ্রীগুরু সংঘ বাংলাদেশ এর কেন্দ্রীয় আশ্রম কাউখালীতে। এখানে জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সেবামূলক অনেক কার্যক্রম রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে মন্দির ভিত্তিক প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা, দাতব্য চিকিৎসালয়ের মাধ্যমে বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা দান, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দ্বারা বিনামূল্যে বিশেষ চক্ষু চিকিৎসা শিবির পরিচালনা, সুরেন্দ্র নাথ দে স্মৃতি পাঠাগার, দৈনিক দরিদ্র নারায়ণ সেবা ইত্যাদি।