হাকিম বাবুল, শেরপুর: তদন্তে ত্রুটির কারণে রাহাত হত্যা মামলায় সম্পূরক চার্জশিট দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। পুলিশের দাখিল করা চার্জশিটে বাদী ও সাক্ষীদের বয়স উল্লেখ না থাকার বিষয়টিকে ত্রুটি হিসেবে চিহ্নিত করে বুধবার দুপুরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. সায়েদুর রহমান খান এই আদেশ দেন।
অন্যদিকে, একইদিন মামলায় চার্জশিটভুক্ত চার আসামিসহ হাজতি পাঁচজনের জামিনের আবেদন নাকচ করা হয়েছে। মামলার পরবর্তী শুনানি হবে ২১ জানুয়ারি।
গত ২ আগস্ট দুপুরে শেরপুর শহরের বিপ্লব-লোপা মেমোরিয়াল গার্লস স্কুলের প্রথম শ্রেণির ছাত্র আরাফাত ইসলাম রাহাতকে (৮) তার আপন খালু আব্দুল লতিফসহ কয়েকজন দুর্বৃত্ত অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবি করে। অপহরণের ছয়দিন পর ৮ আগস্ট দুপুরে নালিতাবাড়ীর মধুটিলা ইকোপার্ক সংলগ্ন পাহাড় থেকে রাহাতের কঙ্কাল উদ্ধার করে পুলিশ।
রাহাতের খালু লতিফসহ অপর তিন আসামি রবিন মিয়া, আসলাম বাবু ও ইমরান আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। ডিএনএ টেস্টের রিপোর্ট প্রাপ্তির পর গত ২৯ নভেম্বর গ্রেফতার আসামি জায়েদা ওরফে আবেদা বেগমকে (আসামি আসলাম বাবুর মা) অব্যাহতির আবেদন জানিয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে লতিফসহ চারজনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে পুলিশ। পরবর্তীতে নিম্ন আদালত ১৩ ডিসেম্বর মামলাটি বিচারের জন্য নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে পাঠান।
বুধবার চাঞ্চল্যকর এই মামলায় চার্জশিট গ্রহণসহ আবেদা বেগমের জামিনের বিষয়ে শুনানি শেষে তদন্তে ত্রুটির কারণে শিশু রাহাত হত্যা মামলায় সম্পূরক চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দাখিলের নির্দেশ দেন ট্রাইব্যুনালের বিচারক। ট্রাইব্যুনালের বিচারক তার পর্যবেক্ষণে উল্লেখ করেন, দাখিলকৃত চার্জশিটে সংবাদদাতা বাদী ও সাক্ষীদের কোনো বয়স উল্লেখ নেই। বিষয়টি তদন্ত কার্যে ত্রুটি হিসেবে বিবেচিত হওয়ায় দ্রুত সম্পূরক চার্জশিট দাখিলের জন্য শেরপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়।
ট্রাইব্যুনালের পিপি অ্যাডভোকেট গোলাম কিবরিয়া বুলু জানান, আইনে কেবল আসামি নয়, সাক্ষীদের বয়সের বিষয়টিও বিবেচিত হয়। আলোচিত মামলায় কোনো সাক্ষীই শিশু বা নাবালক নয়। তদন্তে ওই বিষয়টি উল্লেখ না থাকায় আদালত তদন্ত কর্তৃপক্ষকে যথাযথ আদেশই দিয়েছেন।
এ ব্যাপারে শেরপুর সদর থানার ওসি (ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) মাজহারুল করিম বলেন, আদেশের কপি পেলে অবশ্যই দ্রুত ব্যবস্থা নেব।