শেরপুরে দু’দিনব্যাপী বৃহত্তর ময়মনসিংহ জেলা গণসঙ্গীত উৎসব

হাকিম বাবুল, শেরপুর: ‘ছিড়ে ফেল দৃঢ় হাতে চক্রান্তের জাল’-এ শ্লোগানে শেরপুরে দু’দিনব্যাপী ‘বৃহত্তর ময়নসিংহ জেলা গণসঙ্গীত উৎসব’ ৩ জুন শুক্রবার সন্ধ্যায় জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে শুরু হয়েছে। সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের কেন্দ্রীয় সভাপতি গোলাম কুদ্দুস প্রধান অতিথি হিসেবে গণসঙ্গীত উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। এদিকে, এ উৎসবকে ঘিরে শেরপুরে সাংস্কৃতিক কর্মীদের মাঝে প্রাণচাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। ক্ষুদে, নবীন-প্রবীণ সাংস্কৃতিক কর্মী ও সংগঠকদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে উৎসব প্রাঙ্গণ।

Gonosongit Utshob-1
শিল্পী ফকির আলমগীর গণসঙ্গীত পরিবেশন করছেন

বাংলাদেশ গণসঙ্গীত সমন্বয় পরিষদের সভাপতি, বরেণ্য গণসঙ্গীত শিল্পী ফকির আলমগীরের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের কেন্দ্রীয় সদস্য, ময়মনসিংহ জেলা কমিটির সভাপতি আমির আহমেদ চৌধুরী রতন, গণসঙ্গীত সমন্বয় পরিষদের সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য মানজার চৌধুরী সুইট, গণসঙ্গীত উৎসব উদযাপন পরিষদের আহবায়ক অ্যাডভোকেট ইমাম হোসেন ঠান্ডু, সদস্য সচিব সঞ্চিতা হোড় দীপু, জেলা রবীন্দ্র সংগীত সম্মিলন পরিষদের সভাপতি রাজিয়া সামাদ ডালিয়া প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

উদ্বোধনী ভাষণে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট সভাপতি গোলাম কুদ্দুস বলেন, সুষ্ঠু সাংস্কৃতিক চর্চা ছাড়া মৌলবাদের উত্থান রোধ করা সম্ভব নয়। সংস্কৃতি জাতির পরিচয় নির্ণায়ক। সুষ্ঠু সাংস্কৃতিক চর্চা মানুষের চেতনা ও বোধকে জাগ্রত করে। তাই তৃণমূল পর্যন্ত সাংস্কৃতিক চর্চার বিস্তৃতি ঘটাতেই সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সহায়তায় দেশের বৃহত্তম ১৯ জেলায় গণসংঙ্গীত উৎসব হচ্ছে। শেখ হাসিনার সদিচ্ছায় সংস্কৃতির দিক থেকেও বাংলাদেশ আজ অনেকটাই অগ্রসরমান। কিন্তু একটি উগ্র ধর্মান্ধ গোষ্ঠী মানুষের সাংস্কৃতিক চেতনায় কুঠারাঘাতের মাধ্যমে মূল্যবোধকে হত্যার ষড়যন্ত্র করছে। তিনি বলেন, সুষ্ঠু সাংস্কৃতিক চর্চা ছাড়া মৌলবাদের উত্থান রোধ করা সম্ভব নয়। এজন্য আমরা সরকারের কাছে প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে সংস্কৃতি কর্মকর্তার পদ সৃষ্টি ও শিল্পকলা প্রতিষ্ঠার দাবি জানিয়েছি। সরকার সেই দাবির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে সংস্কৃতিখাতে পূর্বের বরাদ্দ সাড়ে ৩ কোটি টাকা থেকে ৪১ কোটি টাকায় উন্নীত করেছে।

উদ্বোধনী দিনে ফকির আলমগীর, সঞ্চিতা হোড় দীপু ও আবিধ্য রহমান সেতু একক সঙ্গীত পরিবেশন ছাড়াও শেরপুরের উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, ঝিনাইগাতী আদিবাসী সাংস্কৃতিক দল, ময়মনসিংহের মুকুল নিকেতন, নেত্রকোনার শতদল সাংস্কৃতিক গোষ্ঠী গণসঙ্গীত পরিবেশন করেন। ফকির আলমগীর গানের সুরে সুরে কুমিল্লার সংস্কৃতিকর্মী সোহাগী জাহান তনু হত্যার বিচার দাবি করেন। এর আগে সাংস্কৃতিক নেতৃবৃন্দ শিল্পকলা একাডেমির সামনে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিস্তম্ভের শহীদ বেদীতে পুষ্পার্ঘ অর্পণ করেন এবং মঞ্চে ‘নোঙর  তোলো তোলো সময় যে হলো হলো… সূচনা সঙ্গীত পরিবেশন করেন।

সমাপনী দিনে আজ শনিবার বিকালে জাতীয় রবীন্দ্র সম্মিলন পরিষদ, বাংলাদেশ নৃত্য শিল্পী সংস্থা, পাতাবাহার খেলাঘর আসর, জামালপুরের রবীন্দ্র সম্মিলন পরিষদ, কিশোরগঞ্জের নরসুন্দা সঙ্গীত পরিষদ ও উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদসহ একক সঙ্গীত পরিবেশন করবেন ফকির সিরাজ ও আরিফ রহমান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.