ইহুদী নারী রিটা কাটস আইএস এর মূল কারিগর: হানিফ

জাহিদুর রহমান তারিক, ঝিনাইদহ: আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেছেন, ইহুদিদের চক্রান্তে ইসলাম ও মুসলমানদের দিয়ে মুসলমানদের ধ্বংস করতে আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। ইহুদি-নাসারা হচ্ছে মুসলমানদের শত্রু। তারা কখনো বন্ধু হতে পারে না। তিনি বলেন, ইহুদি নারী যিনি ইসলাম ধ্বংসের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত সেই রিটা কাটস হচ্ছে আইএস এর মূল কারিগর। আজ আমাদের ঈমানী দায়িত্ব এসেছে এই ষড়যন্ত্র প্রতিহত করার।

Hanif-Jhenaidah
কর্মশালায়  বক্তৃতা দিচ্ছেন মাহবুব উল আলম হানিফ।

তিনি আরও বলেন, আইএস প্রথমে ইরাক ও সিরিয়ার মুসলমানদের ধ্বংস করেছে। এখন বাংলাদেশসহ অন্যান্য মুসলিম রাষ্ট্র ধ্বংস করতে তারা ষড়যন্ত্র করছে। হানিফ শনিবার দুপুরে ঝিনাইদহ শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তে সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদ প্রতিরোধে ইসলামের আহবান শীর্ষক এক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন। ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক মাহবুব আলম তালুকদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ঝিনাইদহ ইসলামী ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক সুলতান আহম্মেদ।

মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, রাসুল পাক (সা.) মানবতা ও শান্তির মর্মবাণী প্রচার করে মানুষকে দাওয়াত দিতেন। নবী পাকের (সা.) সেই আহবানে সাড়া দিয়ে মানুষ ইসলামের পতাকা তলে এসে শান্তি অন্বেষণ করতেন। আর আইএস মনুষ হত্যা করে ইসলাম কায়েম করতে চায়।

মাহবুব উল আলম হানিফ প্রশ্ন তুলে বলেন, আইএস এর পেছনে কারা ? তিনি বলেন, পৃথীবির বিভিন্ন প্রান্তে মানুষ হত্যার পর আইএস এর পক্ষে দায় স্বীকার করে সাইট ইন্টিলিজেন্ট। গুলশানে হলি আর্টিজানে নৃশংস, নিষ্ঠুর ও বর্বর হামলার পর আইএস দায় স্বীকার করলো। ঝিনাইদহে পুরোহিত ও সেবায়েত হত্যার পরও দায় স্বীকার করা হলো। এখন প্রশ্ন এই সাইট ইন্টিলিজেন্ট চালায় কে? তিনি বলেন, একজন ইহুদি নারী যিনি ইসলাম ধ্বংসের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত সেই রিটা কাটস আইএস এর হয়ে দায় স্বীকার করেন।

হানিফ বলেন, রিটার বাবা ও মা ইহুদি। তারা বসবাস করতেন ইরাকে। রিটার বয়স যখন ছয় বছর তখন তার বাবা ইসরায়েলের পক্ষে গুপ্তচরবৃত্তির দায়ে ধরা পড়েন এবং রিটার বাবার মৃত্যুদণ্ড হয়।

এ ঘটনার পর ইরাক ছেড়ে তারা চলে যান ইসরাইলে। ইসরাইলে বড় হয়ে মোসাদের চাকুরি নেয় রিটা। এরপর ইসলাম বিশ্বকে ধ্বংস করতে রিটাকে আমেরিকার গোয়েন্দা সংস্থায় চাকুরি দেওয়া হয়। তিনি বলেন, এই রিটাই হচ্ছে মুল কারিগর।

হানিফ বলেন, ইহুদি নাসারা হচ্ছে মুসলমানদের শত্রু। আজ ৪০ বছর ধরে ফিলিস্তিনের মানুষের উপর ইহুদিরা অত্যাচার করছে। তারা আমাদের বন্ধু হতে পারে না।

তিনি বলেন, ইসরাইলের মাথায় এসেছে মুসলমানদের ধ্বংস করলে ইহুদিবাদের বিরুদ্ধে কেউ মাথা তুলে দাড়াতে পারবে না। এ জন্য তারা ইরাক, সিরিয়া, লিবিয়া, তিউনিসিয়া ও মিশর ধ্বংস করেছে। সিরিয়া ও ইরাকের উপর ইহুদিদের ক্ষোভ ছিল হামাসকে সহায়তা করার জন্য। এ জন্য তারা আগে এই দুই রাষ্ট্র ধ্বংস করেছে।

হানিফ অভিযোগ করেন, ২০১৩ সালে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরুর পর থেকে জামায়াত ও শিবির দেশে নাশকতা ও তান্ডব শুরু করে। কিন্তু অপরাধীদের বিচার করা রাষ্ট্রের ন্যায্য অধিকার।

পৃথিবীর বহু দেশে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হচ্ছে। ২০১৪ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে বেগম খালেদা জিয়া ৯০ দিনের আন্দোলনে নিষ্ঠুর, পৈচাশিক ও বর্বর কর্মকাণ্ড ছড়িয়ে দিয়েছিল। পেট্রোল বোমা ছুড়ে মানুষ খুন করেছিল। তারপর শুরু করা হলো গুপ্তহত্যা। বিদেশি নাগরকিদের একের পর এক খুন করা হলো। তারপর এখন হাজার বছরের সম্প্রীতি নষ্ট করে দেশে সেবায়েত, পুরোহিত ও হিন্দু ধর্ম যাজকদের হত্যা করা হচ্ছে।

তিনি উল্লেখ করেন, এসব হত্যায় যারা গ্রেফতার হচ্ছে তারা সবাই শিবিরের রাজনীতির সাথে জড়িত। তাহলে কি শিবির আইএস হয়ে গেল? প্রশ্ন রাখেন হানিফ। তিনি অভিযোগ করেন, শেখ হাসিনা সরকারকে উৎখাত করার জন্য বিএনপি ইসরাইলী গুপ্তচর মোসাদের সাথে হাত মিলিয়েছে। বিএনপি নেতা আসলাম চৌধুরী ও তারেক রহমান মেন্দি সাফাদীর সাথে হাত মিলিয়ে এই চক্রান্ত করছেন বলেও তিনি অভিযোগ করেন।

কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে সাবেক মন্ত্রী ও সংসদ সদস্য আব্দুল হাই, সংসদ সদস্য তাহজীব ইলম সিদ্দিকী সমি, সংসদ সদস্য নবী নেওয়াজ, সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার, জেলা পরিষদের প্রশাসক এড. আব্দুল ওয়াহেদ জোয়ারদার, পুলিশ সুপার আলতাফ হোসেন, ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌরসভার মেয়র সাইদুল করিম মিন্টু, জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মকবুল হোসেন, হিন্দু বৈদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি নারায়ণচন্দ্র বিশ্বাস ও ইসলামি ফাউন্ডেশনের সাবেক পরিচালক হারুন অর রশিদ বক্তব্য রাখেন। কর্মশালায় মসজিদের ইমাম, মোয়াজ্জিন, আলেম, জনপ্রতিনিধিসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.