সম্রাটের অবাধ সন্ত্রাস, কলাপাড়ায় নবম শ্রেণির ছাত্রীর স্কুল বন্ধ

মিলন কর্মকার রাজু, কলাপাড়া (পটুয়াখালী): যৌন হয়রানির প্রতিকার চেয়ে থানায় অভিযোগ করার পর কলাপাড়ার নবম শ্রেণির এক ছাত্রীর স্কুলে যাওয়া বন্ধ হয়ে গেছে। সম্রাট নামের ‘প্রেম-প্রত্যাশী’ এক বখাটের নেতৃত্বে তাদের বাড়িতে সশস্ত্র হামলা হয়েছে। বখাটেদের অনবরত হুমকিতে মেয়েটি (১৪) এখন কার্যত গৃহবন্দি। গত ১৫ দিন ধরে স্কুলে যেতে পারেনি সে। অর্ধবার্ষিক পরীক্ষার ১০টি বিষয়েও ছাত্রীটি অংশ নিতে পারেনি।

সরেজমিন জানা গেছে, কলাপাড়া-আমতলী সীমান্তবর্তী কাঠালিয়া তাজেম আলী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ওই ছাত্রী ১৩ জুলাই দুপুরে পরীক্ষা শেষে বাসায় ফেরার পথে যৌন হয়রানির শিকার হয়। সাইফুল ইসলাম সম্রাট, মিঠু হাওলাদার, মশিউর রহমানসহ কয়েকজন যুবক মেয়েটির পথরোধ করে টানাহ্যাঁচড়া করে ও শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেয়। ছাত্রীর চিৎকারে এলাকাবাসী এগিয়ে এলে বখাটেরা পালিয়ে যায়।

এ ঘটনায় ১৯ জুলাই ছাত্রীর বাবা কলাপাড়া থানায় তিনজনের নাম উল্লেখ করে চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ২১ জুলাই ওই ছাত্রীর বসতঘরে সশস্ত্র হামলা চালায় বখাটেরা। ছাত্রী ও তার বাবা-মাকে বেধড়ক মারধর করে বখাটেরা। এদিনও ছাত্রী ও তার মা শ্লীলতাহানির শিকার হয়। তাদের নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার লুট করে বখাটেরা। হামলা ও লুটতরাজের ঘটনায় পরদিন ছাত্রীর বাবা কলাপাড়া থানায় মামলা করেন।

ওই ছাত্রী জানায়, সপ্তম শ্রেণিতে পড়ার সময় থেকে সম্রাটও তার সহযোগীরা তাকে উত্যক্ত করছে। এদের জ্বালায় আগের স্কুল ছেড়ে এই স্কুলে ভর্তি হয়ে সে। কিন্তু বখাটেরা তার পিছু ছাড়েনি। এখন ঘর থেকে বের হলেই তুলে নিয়ে যাওয়ার হুমকি দেওয়ায় ভয়ে স্কুলে যাচ্ছে না সে, অর্ধবার্ষিক পরীক্ষার তিনটি বিষয়ের পরীক্ষা দেওয়ার পর বাকি ১০টি পরীক্ষা দিতে পারেনি।

ছাত্রীর বাবা জানান, প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখান করায় তার মেয়েকে সন্ত্রাসীরা টার্গেট করেছে। সন্ত্রাসীদের হুমকিতে ভয়ে মেয়েকে স্কুলে পাঠাতে সাহস পাচ্ছেন না তিনি। পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি, এখন স্কুলে যাওয়া বন্ধ হয়ে গেছে তার মেয়ের। তিনি এ সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রশাসনের সহায়তা চেয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.