স্বপন কুমার কুন্ডু, ঈশ্বরদী (পাবনা): রূপপুরের পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রযুক্তিগত দিক থেকে বিশ্বের সর্বাধুনিক ও উচ্চমানের হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান।
সম্প্রতি তিনি রাশিয়ার এইএম টেকনোলজির ভলগাদন্সক কারখানা পরিদর্শন শেষে দেশে ফিরে সোমবার এক টেলিফোন সাক্ষাৎকারে একথা এ মন্তব্য করেন।
নির্মানাধীন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য রিঅ্যাক্টর এবং স্টিম জেনারেটরের প্রস্তুতপ্রক্রিয়া সম্পর্কে জানতে ২৭শে আগস্ট তাঁর নেতৃত্বে বাংলাদেশের একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল ওই কারখানা পরিদর্শন শেষে রোববার ঢাকায় ফিরেন।
মন্ত্রী কারখানার প্রকৌশলীসহ অন্যান্য শ্রমিকদের দক্ষতা ও পেশাদারিত্বের প্রশংসা করে বলেন, ‘রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য যে সময় নির্ধারণ করা হয়েছে, তা যে সর্বোচ্চ কার্যকরভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে, সে ব্যাপারে আমি নিশ্চিত হয়েছি। কাজের মান নিয়েও কোনো প্রশ্ন নেই। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে বাংলাদেশ একটি যথাযথ ও উচ্চমানের পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র পেতে যাচ্ছে।’
প্রতিনিধিদলে রাশিয়ায় বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এসএম সাইফুল হক, বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের চেয়ারম্যান মাহাবুবুল হক, রূপপুরের প্রকল্প পরিচালক ড. শৌকত আকবরসহ অন্যান্য উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা অর্ন্তভুক্ত ছিলেন।
প্রকল্প পরিচালক ড. শৌকত আকবর জানান, রুশ রাষ্ট্রীয় পরমাণু শক্তি কর্পোরেশন রসাটমের যন্ত্র-নির্মাণ শাখার অন্তর্ভুক্ত প্রতিষ্ঠান এইএম টেকনোলজিতে রূপপুর প্রকল্পের দুটি ইউনিটের জন্য সকল অভ্যন্তরীণ যন্ত্রপাতিসহ দুটি রিঅ্যাক্টর এবং স্টিম জেনারেটরের দুটি সেট প্রস্তুতের কাজ চলছে।
প্রকল্প পরিচালক জানান, প্রতিনিধিদল রিঅ্যাক্টর প্রেসার ভেসেল এবং স্টিম জেনারেটর প্রস্তুতের মূল ওয়ার্কশপ ঘুরে দেখেছেন। প্রস্তুুতকৃত যন্ত্রপাতি ছাড়াও রূপপুর প্রকল্পের এক নম্বর ইউনিটের জন্য নির্মানাধীণ রিঅ্যাক্টর প্রেসার ভেসেলের ওয়েল্ডিং প্রক্রিয়াও পর্যবেক্ষণ করেন তাঁরা। এসময় প্রতিনিধিদলকে প্রথম শ্রেণির নিরাপত্তা ক্যাটাগরি যন্ত্রপাতির প্রস্তুতপ্রক্রিয়া সম্পর্কে অবহিত করা হয়। কারখানার ক্লিন-অ্যাসেম্বলি সেকশনে তাঁরা স্টিম জেনারেটরের কয়েলিং প্রক্রিয়াও দেখেন।
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের নকশা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের দায়িত্ব পালন করছে রসাটম। প্রকল্পটিতে ৩-প্লাস প্রজন্মের ভিভিইআর-১২০০ রিঅ্যাক্টরভিত্তিক দুটি বিদ্যুৎ ইউনিট স্থাপন করা হচ্ছে। প্রতিটি ইউনিটের বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ১,২০০ মেগাওয়াট। বিদ্যুৎকেন্দ্রের জীবনকাল হবে ৬০ বছর, তবে এটা ২০ বছর পর্যন্ত বাড়ানো সম্ভব হবে। প্রকল্পটির প্রথম ইউনিট ২০২৩ এবং দ্বিতীয়টি ২০২৪ সালে উৎপাদনে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।