বুধবার (৩১ জানুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের হুমায়ুন রোডের গণমাধ্যম উন্নয়ন ও যোগাযোগ বিষয়ক প্রতিষ্ঠান সমষ্টির কার্যালয়ে সাংবাদিক ও উন্নয়নকর্মী মীর সাহিদুল আলমের স্মরণসভা ও দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।
এ আয়োজনে অংশ নেন মীর সাহিদুল আলমের বন্ধু, সহকর্মী, শুভাকাঙ্ক্ষী ও পরিববারের সদস্যরা।
স্মরণসভায় স্মৃতিচারণ করেন বাংলাদেশ সরকারের সাবেক জেষ্ঠ্য সচিব ও সমষ্টির চেয়ারপারসন আবু আলম মো. শহিদ খান, বার্ড-এর সাবেক মহাপরিচালক এম খায়রুল কবীর, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সাবেক পরিচালক কৃষিবিদ ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম, চ্যানেল আই অনলাইন-এর সম্পাদক ও চ্যানেল আই-এর প্রধান বার্তা সম্পাদক জাহিদ নেওয়াজ খান, ঢাকা ট্রিবিউনের নির্বাহী সম্পাদক রিয়াজ আহমদসহ তাঁর বিভিন্ন সময়ের সহকর্মীরা।
এ সময় সমষ্টির পরিচালক মীর মাসরুর জামান, গবেষণা ও যোগাযোগ পরিচালক রেজাউল হক, মীর সাহিদুল আলমের স্ত্রী দিলরুবা আফরিনসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় বক্তারা বলেন, মীর সাহিদুল আলম একজন সদালাপী, সজ্জন, বিনয়ী, হাস্যোজ্জ্বল, পরোপকারী ও ব্যক্তিত্বসম্পন্ন মানুষ ছিলেন। সমাজে যাদের মধ্যে মানবীয় গুণাবলি থাকে তারাই সত্যিকারের রোল মডেল। সাহিদুল তেমনি একজন ছিলেন। ‘‘আমরা কেমন ভাই চাই, কেমন সন্তান চাই’’ —এই প্রশ্নগুলো কেউ যদি বলেন তাহলে সবাই বলবে মীর সাহিদুল আলম যেমন মানুষ ছিলেন সে ধরনের মানুষ চাই।
দেশের তৃণমূল সাংবাদিকতার মানোন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রাখা সাহিদুলের বিভিন্ন গবেষণা ও প্রকাশনা যেন ভবিষ্যতেও ছড়িয়ে দিয়ে সাংবাদিকদরে মানোন্নয়ন করা যায় এ বিষয়ে আশাব্যক্ত করেন বক্তারা। পাশাপাশি মীর সাহিদুলের পরিবারের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতিও দেন তারা।
স্মরণসভা শেষে মীর সাহিদুল আলমের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।
মীর সাহিদুল আলম ১৭ জানুয়ারি সকালে ঢাকার চাঁদ উদ্যানের নিজ বাসায় মারা যান। তিনি দু বছরের বেশি সময় ধরে মস্তিষ্কের ক্যান্সারে ভুগছিলেন। ওই দিনই তার নিজ বাড়ি নেত্রকোনার মুক্তারপুরে জানাজার পর দাফন করা হয়।
মীর সাহিদুল আলম সমষ্টির কর্মসূচি পরিচালক ছিলেন। এছাড়া তিনি দেশের খবর-এর নির্বাহী সম্পাদকের দায়িত্বও পালন করেন তিনি।
মীর সাহিদুল আলমের জন্ম ২ মার্চ ১৯৬৯ সালে নেত্রকোনায়। তাহেরা খাতুন ও মীর ফজলুল হক দম্পতির বড় সন্তান তিনি। তিনি নেত্রকোনার আঞ্জুমান স্কুল, ঢাকার তিতুমীর কলেজ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে পড়াশোনা করেন।
কর্মজীবনে তিনি বাংলাবাজার পত্রিকায় সাংবাদিকতা শুরু করেন। পরে প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের (পিআইবি) কিছু গবেষণাকর্মের সঙ্গে যুক্ত হন। তিনি গণমাধ্যম বিষয়ক প্রতিষ্ঠান ম্যাস-লাইন মিডিয়া সেন্টার (এমএমসি) পটুয়াখালী ও নোয়াখালী জেলার মিডিয়া সেন্টার প্রধান ছিলেন। ওই সময় তিনি এমএমসি প্রকাশিত সংবাদপত্র মেঠো বার্তা এবং লোক সংবাদ-এর নির্বাহী সম্পাদক ছিলেন। পরবর্তীতে একই প্রতিষ্ঠানের সাংবাদিকতাবিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মকাণ্ডে যুক্ত হন। তিনি ব্র্যাকের অ্যাডভোকেসি ও মানবাধিকার বিভাগ এবং মেরি স্টোপস-এ কাজ করেন। পরবর্তীতে তিনি সমষ্টির কর্মসূচি পরিচালক হিসেবে সাংবাদিক প্রশিক্ষণ, গণমাধ্যম গবেষণাসহ নানাবিধ কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
মীর সাহিদুল আলমের প্রকাশনার মধ্যে অন্যতম রিপোটিং: প্রসঙ্গ সুশাসন, তৃণমূল মানুষের তথ্য অধিকারের খবর (সম্পাদনা), প্রান্তিক সাংবাদিকতার বয়ান (সম্পাদনা), কৃষি সাংবাদিকতা (সহ-লেখক), গণমাধ্যম সহায়িকা: জলবায়ু অর্থায়ন, গণমাধ্যম সহায়িকা: নারী কৃষকদের অদিকার ও স্বীকৃতি (সহ-লেখক), সহিংস উগ্রবাদ প্রতিরোধ: গণমাধ্যম সহায়িকা (সম্পাদনা)।