নির্বাচন নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, দেশের সংকটকালে ছাত্রদের আহ্বানে আমরা সরকারের দায়িত্ব গ্রহণ করেছি। ছাত্ররা আমাদের প্রাথমিক নিয়োগকর্তা। কখন নির্বাচন হবে সেটা সম্পূর্ণ রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত, আমাদের সিদ্ধান্ত নয়। আমরা কেউ দেশ শাসনের মানুষ নই।
রোববার জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া ভাষণ প্রধান উপদেষ্টা এই কথা বলেন।
তিনি বলেন, পারস্পারিক আস্থা, বিশ্বাস ও সহযোগিতা হবে আমাদের পররাষ্ট্রনীতির ভিত্তি। এসময় বন্যা পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক করতে ব্যবস্থা গ্রহণের কথাও জানান প্রধান উপদেষ্টা।
এসময় প্রধান উপদেষ্টা বলেন, লক্ষ লক্ষ শহীদের ত্যাগের বিনিময়ে পাওয়া বাংলাদেশ ফ্যাসিবাদের হাতে ধ্বংস হয়ে গেছে। স্বৈরাচারের পিয়নও দুর্নীতির মাধ্যমে ৪০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে।
তিনি বলেন, বিগত ফ্যাসিবাদী সরকার হরণ করেছে জনগণের সাংবিধানিক অধিকার। ভোটাধিকার হরণ করেছে। এগিয়ে যাওয়ার পথে স্বৈরাচার নিজের পরিবার ও দলের কিছু মানুষের কাছে দেশ তুলে দিয়েছে। এই ধ্বংসের দারপ্রান্ত থেকেই নতুন বাংলাদেশ গড়তে হবে।
দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে অন্তর্বর্তী সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে জনগণের ওপর আস্থা ফিরিয়ে আনতে নির্দেশ দিয়েছি। জুলাই-আগস্টের হত্যার তদন্ত করতে জাতিসংঘকে আহ্বান জানিয়েছি। তাদের প্রাথমিক দল ইতিমধ্যে এসের গেছে। আন্দোলনে সকল আহতদের পুনর্বাসন, চিকিৎসার ভার সরকার বহন করবে। জুলাইয়ের গণহত্যায় শহীদদের জন্য স্মৃতি ফাউন্ডেশন গঠনের কথাও জানান প্রধান উপদেষ্টা।
বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ সম্পর্কে তিনি বলেন, হুমকি দেয়া, মামলা নিতে চাপ দেয়া, বিচারের জন্য আদালতে হামলার প্রবণতা থেকে বের হতে হবে। তিনি বলেন, আমাদের কাজ করতে না দিলে দুঃখ গোচানোর সকল পথ বন্ধ হয়ে যাবে। ঘেরাও করে আমাদের গুরুত্বপূর্ণ কাজে বাধা দিবেন না।
তিনি জানান, এমন একটি দেশ গড়তে চাই যেখানে জনগণের মানবাধিকার থাকবে সুরক্ষিত। বাংলাদেশকে যাতে কেউ কোনদিন পুলিশি রাষ্ট্রে পরিণত না করতে পারে তা নিশ্চিত করা হবে। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা হবে।হাসপাতালগুলোকে আধুনিকায়নের উদ্যোগ নেয়া হবে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ব্যাংকিং খাতে সুশাসন নিশ্চিত করতে ব্যবস্থা নিয়েছি। দীর্ঘমেয়াদী সংস্কারের জন্য কমিশন গঠন করতে হবে। বিচার বিভাগকে দলীয়করণ থেকে মুক্ত করতে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। তালিকা প্রস্তুত করে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করা হবে। পুলিশ কমিশন গঠন করা হবে। স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করা হবে।
তিনি আরও বলেন, ফ্যাসিবাদ যে চ্যালেঞ্জ রেখে গেছে তা মোকাবিলা করতে আমরা প্রস্তুত।