নানা আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের জনসংযোগ বিভাগের সাবেক পরিচালক (উপসচিব) লাবণ্য আহমেদের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হয়েছে।
এ উপলক্ষ্যে দোয়া-মাহফিলসহ এতিমদের মধ্যে খাবার বিতরণ করা হয়।
এর আগে গত বুধবার সন্ধ্যায় তার জন্মদিন ও মুত্যুবার্ষিকীর মাঝামাঝি দিনে লাবণ্য আহমেদের স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়। রাজধানীর বাংলামটরস্থ সংস্কৃতি বিকাশ কেন্দ্রে “তুমি রবে নিরবে” শীর্ষক আলোচনাসভায় প্রিয়জন ও স্বজনরা তাঁর স্মৃতিচারণ করেন। এ সময় পরিবেশ ভারী হয়ে ওঠে।
আলোচনায় নেন এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান বদিউর রহমান, বাবা নাসির আহমেদ, মা শাহেনশাহ বেগম, লুৎফর রহমান, মোমিনুল হক দুলু, মাহবুব পান্না, রেহানা পারভীন, সাইদুল দেওয়ান, মোর্শেদা মুন্নি, নিশাত জাহান রানা, অজন্তা রানী সাহা, সুজন আহমেদ, ছেলে আজয়াদ বারী ও আজমাইন বারীসহ অন্যরা।

আলোচনার আগে ফারজানা ওয়াহিদ সায়ান, নাফিস কামাল, সাবরিনা নিপু ও মৌরির রবীন্দ্রসঙ্গীত পরিবেশনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানটি শুরু হয়। কবিতা আবৃত্তি করেন শারমিন লাকী, সাগর সেন, সাবরিনা নিপু এবং সাব্বির আহমেদ শুভ।
এছাড়াও লাবণ্য আহমেদের জীবনাদর্শন, পেশাগত জীবনের দায়িত্বশীলতা, দক্ষতা ও অভিজ্ঞতাসহ ব্যাক্তিগত জীবন সম্পর্কে আলোচনা করা হয়।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন অনন্যা আহমেদ। অনুষ্ঠানে বক্তারা জানান, লাবণ্য আহমেদ পেশাগত জীবনে একজন দায়িত্বশীল, দক্ষ ও অভিজ্ঞ জনসংযোগ কর্মকর্তা হিসেবে নিজ কর্মক্ষেত্র, গণমাধ্যম এবং তথ্য ও সম্প্রচার ক্ষেত্রে সুপরিচিত ছিলেন। সততা ও নিষ্ঠার পাশাপাশি তার মার্জিত আচরণ এবং চমৎকার ব্যক্তিত্বের কারণে তিনি সবার স্নেহ-ভালবাসা-শ্রদ্ধা অর্জন করেছিলেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিষয়ে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জনের পর ১৯৯৬ সালের জুলাই মাসে সহকারী পরিচালক হিসেবে জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের গণসংযোগ অধিশাখায় যোগদানের পর থেকে সুদীর্ঘ সময়ে সংসদ সচিবালয়ের সকল স্তরের সহকর্মীদের কাছে অত্যন্ত প্রিয়পাত্র ছিলেন তিনি।
লাবণ্য আহমেদ শহীদ পরিবারের সন্তান। আপন বড় মামা শহীদ শহীদুল্লা কায়সার, মেজ মামা শহীদ জহির রায়হানের বোন শাহেনশা বেগমের প্রথম কন্যা লাবণ্য আহমেদ। তার বাবা বাংলাদেশ আর্মস ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট নাসির আহমেদ বেনু মুক্তিযুদ্ধের একজন সংগঠক ও অস্ত্র প্রশিক্ষক এবং ১৯৭২ সালে দায়েরকৃত বুদ্ধিজীবী হত্যা মামলার বাদী। মা শাহেনশা ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির নিবেদিত সদস্য।
তিন ছেলের জননী ৫৮ বছর বয়সী এ সাবেক উপসচিব ২০২৩ সালের ২৫ অক্ক্টোবর বুধবার বেলা দেড়টার দিকে কলকাতার টাটা মেডিকেল সেন্টারে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তিনি ২০১৮ সাল থেকে দুরারোগ্য ব্লাড ক্যান্সার রোগে ভুগছিলেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ থেকে মাস্টার্স শেষ করে বিসিএস দেওয়ার পাশাপাশি একটি প্রতিষ্ঠিত সংবাদপত্রের সাথে যুক্ত হয়ে লাবণ্য তাঁর কর্মজীবন শুরু করেন।
তিনি সুইড বাংলাদেশ, শিশু কল্যাণ পরিষদ, এসিড সর্ভাইভাল ফাউন্ডেশন সহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
বিজ্ঞপ্তি