রঙ্গশালায় আবারো বাংলার রঙ, সাফ নারী ফুটবলে চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ

সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা ধরে রাখলো বাংলাদেশ। আজ বুধবার নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর দশরথ রঙ্গশালা স্টেডিয়ামে স্বাগতিক নেপালকে ২-১ গোলে হারিয়ে টানা দ্বিতীয়বারের মতো সাফের শ্রেষ্ঠত্ব দখল করেছে সাবিনা খাতুনের দল। খবর বাসসের।

২০২২ সালে এই স্টেডিয়ামেই নেপালকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো সাফের শিরোপা জয় করেছিল বাংলাদেশ। সেই আসরে স্কোরলাইন ছিল ৩-১।

চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ দল। ছবি: অল নেপাল ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন।

এবারের ফাইনালের প্রথমার্ধ গোলশুন্য থাকার পর মনিকা চাকমার গোলে ৫২ মিনিটে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। চার মিনিট পরে আমিশা কার্কির গোলে সমতায় ফেরে নেপাল।  ৮১ মিনিটে ঋতুপর্না চাকমার দুর্দান্ত গোলে শিরোপা নিশ্চিত করে বাংলাদেশ।

প্রথমার্ধে উভয় দলই বেশ কিছু সুযোগ তৈরি করেছিল। ১০ মিনিটে প্রথম একটি ভালো সুযোগ পায় নেপাল। সাবিত্রা ভান্ডারি মধ্যমাঠ থেকে একটি লম্বা পাস রিসিভ করে পাশে থাকা আমিশা কার্কির দিকে বাড়িয়ে দিয়েছিলেন। বক্সের ঠিক বাইরে থেকে কার্কির ডান পায়ের শট ক্রসবারে লেগে ফেরত আসে। ২৮ মিনিটে আবারো আমিশার ভুলে নেপালের স্বপ্নভঙ্গ হয়। সাবিত্রার কাছ থেকে আসা বল নিয়ন্ত্রণে নিতে ব্যর্থ হন আমিশা।

৩৫ মিনিটে নেপালের রক্ষণভাগের ভুলে সুযোগ পেয়েছিলেন মনিকা। কিন্তু সঠিকভাবে শট নিতে পারেনিন তিনি। বল চলে যায় পোস্টের ওপর দিয়ে।  প্রথমার্ধে সেভাবে ভালো কোনো আক্রমণ করতে না পারলেও বাংলাদেশ দুটি কর্নার পেয়েছিল, কিন্তু সেগুলো কাজে লাগেনি।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই আক্রমণ ও পাল্টা-আক্রমণে জমে ওঠে লড়াই। দুই দলই চেষ্টা করে প্রতিপক্ষের রক্ষণ ভাঙার। যদিও প্রথম কয়েকটি প্রচেষ্টা সফল হয়নি।

আক্রমণের ধারাবাহিকতায় দ্বিতীয়ার্ধের ৫২ মিনিটে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। দারুণ এক আক্রমণে জটলার মধ্যে থেকে নেপালের রক্ষণভাগ ভেদ করে বাংলাদেশকে এগিয়ে দেন মনিকা চাকমা।

ম্যাচে দুর্দান্ত খেলতে থাকা প্রীতি রাইয়ের অসাধারণ এক থ্রু পাস থেকে লক্ষ্যভেদ করে আমিশা। এই গোলে চার মিনিটের মধ্যেই সমতায় ফিরে নেপাল। গোলবার ছেড়ে কিছুটা এগিয়ে আসা গোলরক্ষক রুপনা চাকমার পক্ষে এই গোল আটকানো সম্ভব ছিলনা। ৬৭ মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে অসাধারণ এক শট নেন মারিয়া মান্ডা। দুর্দান্ত দক্ষতায় রুখে দিয়ে নেপালকে রক্ষা করেন গোলরক্ষক আঞ্জিলা।

৭১ ও ৭৬ মিনিটে দুটি আক্রমণ থেকে গোল করতে ব্যর্থ হয় নেপাল। তবে ম্যাচের দৃশপট পাল্টে যায় ৮১ মিনিটে। বামদিক থেকে খ্রো-ইন থেকে পাওয়া বলে ঋতুপর্নার অসাধারাণ কোনাকুনি শটটি স্বাগতিক গোলরক্ষকের পক্ষে আটকানো কঠিন ছিল।

স্টেডিয়াম ভর্তি দর্শককে নিশ্চুপ করে দিয়ে বাংলাদেশ শিবির উল্লাসে ফেটে পড়ে। যোগ করা পাঁচ মিনিটে আর কোনো দলই গোলের দেখা পায়নি।

সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশীপের ফাইনালে বাংলাদেশ একাদশে একটি পরিবর্তন নিয়ে মাঠে নামে।

স্ট্রাইকার মোসাম্মত সাগরিকার স্থানে শামসুন্নাহার জুনিয়র দলে ফিরেছেন। ভুটানের বিপক্ষে সেমিফাইনালে মূল দলে ছিলেন সাগরিকা।

বাংলাদেশ একাদশ : রুপনা চাকমা, সাবিনা খাতুন, শিউলি আজিম, শামসুন্নাহার জুনিয়র, আফঈদা খন্দকার, মনিকা চাকমা, তহুরা খাতুন, ঋতুপর্না চাকমা, শামসুন্নাহার সিনিয়র, মাসুরা পারভিন, মারিয়া মান্ডা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.