তরুণ প্রজন্মকে রক্ষায় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন দ্রুত সংশোধন ও বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের মতে নতুন গ্রাহক তৈরির জন্য তরুণরাই এখন তামাক কোম্পানিগুলোর প্রধান লক্ষ্য।
বাংলাদেশে প্রতিবছর তামাকজনিত রোগে মারা যায় ১ লাখ ৬১ হাজার মানুষ। এত বিপুল প্রাণহানির পরও নানা কৌশলে তামাক ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে কোম্পানিগুলো।
বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস ২০২৫ সামনে রেখে ২৮ মে প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান) ও আত্মা আয়োজিত এক ভার্চুয়াল সভায় এসব তথ্য তুলে ধরা হয়। এবছরের প্রতিপাদ্য: “তামাক কোম্পানির কূটকৌশল উন্মোচন করি, তামাক ও নিকোটিনমুক্ত বাংলাদেশ গড়ি।” প্রতিবছর ৩১ মে দিবসটি পালিত হয়।
সভায় জানানো হয়, স্কুলের আশপাশে মুদি দোকানে শিশুদের দৃষ্টিসীমার মধ্যে তামাক পণ্য প্রদর্শন করা হয়। এছাড়া বাবলগাম, চকলেট, চেরি সুগন্ধিযুক্ত ই-সিগারেট ও ভ্যাপ পণ্য বিক্রি হচ্ছে, যেগুলোর প্রতি শিশু-কিশোরদের আকৃষ্ট হচ্ছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, এসব পণ্যে ১৬ হাজারের বেশি সুগন্ধি ব্যবহার করছে কোম্পানিগুলো। এগুলো ইউএসবি স্টিক, কলম কিংবা ক্যান্ডির মতো আকর্ষণীয় ডিজাইনে বাজারজাত করা হয়।
সভায় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন দ্রুত সংশোধন ও কার্যকর করা, ২০২৫-২৬ বাজেটে সিগারেটের মূল্যস্তর ৪ থেকে কমিয়ে ৩টিতে নিয়ে আসা, তামাক কোম্পানিতে সরকারের শেয়ার প্রত্যাহার, সিগারেটকে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তামাক ও নিকোটিন পণ্যের বিজ্ঞাপন বন্ধ করার দাবি জানানো হয়।
সভায় অংশ নেন প্রজ্ঞা, আত্মা, স্বাস্থ্যখাত, নারী সংগঠন ও বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থার প্রতিনিধিরা। প্রজ্ঞার হেড অব প্রোগ্রামস হাসান শাহরিয়ার এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনা করেন। তামাকবিরোধী গণমাধ্যমকর্মীদের মোর্চা আত্মা’র সহ-আহ্বায়ক নাদিরা কিরণের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, স্বাস্থ্যখাত সংস্কার কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ডা. লিয়াকত আলী, বাংলাদেশ ক্যান্সার সোসাইটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. গোলাম মহিউদ্দিন ফারুক, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও ইন্টারন্যাশনাল স্পোর্টস ডেভেলপমেন্ট কনসালট্যান্ট অধ্যাপক ডা. অনুপম হোসেন, বিসিআইসি-এর সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোস্তাফিজুর রহমান, জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেল (এনটিসিসি)-এর সাবেক সমন্বয়কারী মুহাম্মাদ রূহুল কুদ্দুস, ডব্লিউবিবি ট্রাস্ট-এর নির্বাহী পরিচালক সাইফুদ্দিন আহমেদ, নারী মৈত্রী’র নির্বাহী পরিচালক শাহীন আকতার ডলি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. রুমানা হক, গ্রামবাংলা উন্নয়ন কমিটির নির্বাহী পরিচালক এ কে এম মাকসুদ, প্রত্যাশা’র সাধারণ সম্পাদক হেলাল আহমেদ, এইড ফাউন্ডেশনের প্রকল্প পরিচালক শাগুফতা সুলতানা, আত্মা’র আহ্বায়ক মর্তুজা হায়দার লিটন ও সহ-আহ্বায়ক মিজান চৌধুরী এবং প্রজ্ঞা’র নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়ের।