প্রতিনিধি, শেরপুর: পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সোমবার সাবেক গভর্নর, ভাষাসৈনিক, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, মুক্তিযোদ্ধা ও বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমানের দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
সকাল সাড়ে ১০টায় শেরপুরের শহীদ দারোগ আলী পৌর পার্ক মাঠে নামাজে জানাযা শেষে চাপাতলি পৌর কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
তার জানাযার জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষের ঢল নামে। পৌর পার্ক মাঠে সদর ইউএনও মো. হাবীবুর রহমানের নেতৃত্বে পুলিশের একটি সশস্ত্র দল তাকে ‘গার্ড অব অনার’ প্রদান করে। এসময় বিউগলের করুণ সুর বেজে ওঠে।
এর আগে জেলা আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি, জাসদসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে তার কফিনে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করা হয়।
এসময় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হুইপ আতিউর রহমান আতিক, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সাবেক এমপি মাহমুদুল হক রুবেল, জেলা জাপা সভাপতি মো. ইলিয়াছ উদ্দিন, উপজেলা চেয়ারম্যান ছানুয়ার হোসেন ছানু, পৌর মেয়র হুমায়ুন কবীর রুমান, বর্ষীয়ান শিক্ষাবিদ পণ্ডিত ফসিহুর রহমানসহ বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ তার স্মৃতি স্মরণ করে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন।
অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমানের মৃত্যুতে এদিন জেলা জজশিপের আওতাধীন আদালতসমূহে ‘কোর্ট রেফারেন্স’ ঘোষণা করায় কোনো মামলার কার্যক্রম পরিচালিত হয়নি।
১১ অক্টোবর রবিবার বিকাল আড়াইটায় বার্ধক্যজনিত কারণে শহরের খরমপুর এলাকার নিজ বাসভবনে প্রবীণ রাজনীতিক অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান (৯৩) মৃত্যুবরণ করেন। তিনি দুই ছেলে ও চার মেয়ে রেখে গেছেন।
তার মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও জনপ্রশাসন মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, হুইপ আতিউর রহমান আতিক, সংসদ সদস্য ফাতেমাতুজ্জোহুরা শ্যামলী, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট চন্দন কুমার পালসহ অনেকে শোক প্রকাশ করেছেন।
অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনে অংশ নেন। বঙ্গবন্ধুর অত্যন্ত প্রিয় এ নেতা মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে শেরপুর অঞ্চলে সংগঠকের দায়িত্ব পালন করার পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। তিনি শেরপুর থানা-মহকুমা ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন। ১৯৭০ এর নির্বাচনে তিনি শেরপুর-শ্রীবরদী এলাকা থেকে জাতীয় পরিষদ সদস্য নির্বাচিত হন। বঙ্গবন্ধু ঘোষিত ৬১তম জেলার তিনি প্রধান উদ্যোক্তা ও গভর্নর ছিলেন। পরবর্তীতে তিনি এমসিএ এবং এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন।