আমিনা বিলকিস ময়না, সাতক্ষীরা: ওপারে উত্তর চব্বিশ পরগানা, এপারে সাতক্ষীরা। ওপারে ছিল উত্তম-সুচিত্রা-এপারে স্বপন কুমার। ওপারে ছিল শাড়ি চুড়ি-এপারে ছিল ইলিশ। অনুষ্ঠানে কথা বলতে বলতে এ রকম নষ্টালজিক হয়ে পড়ছিলেন দু‘পারের সব কবি সাহিত্যিক শিল্পী সাংস্কৃতিক কর্মীরা।
“শুদ্ধ সাংস্কৃতিক চর্চা গড়ুক সম্প্রীতির বন্ধন” শ্লোগানে শুক্রবার ছুটির দিনে সাতক্ষীরায় অনুষ্ঠিত হয়েছে রবীন্দ্র-নজরুল উৎসব।
নজরুল একাডেমি-সাতক্ষীরা, অগ্নিবীণা সাহিত্য সংসদ ও সুন্দরবন সাহিত্য পরিষদের আয়োজনে শিল্পকলা একাডেমিতে ভারতÑ বাংলাদেশের শিল্পীদের নিয়ে এ উৎসবের আয়োজন করে।
ভারত দলে ছিলেন, কলকাতার সাংস্কৃতিক সংগঠন দশরূপক‘র দলনেতা রবীন্দ্র গবেষক অরবিন্দ ঘোষ, এষা ঘোষ, সোমা বিশ্বাস, সুজাতা রায় দৃষ্টি, তন্ময় চট্টো পাধ্যায়, সুপ্রিয় চক্রবর্তি, মৌসুমী নাগ মুখার্জী, জয়শ্রী দে, মঞ্জুশ্রী চ্যাটার্জী, সোমনাথ কর্মকার, স্বপন চ্যাটার্জী। এদলের “ফুল পাখি প্রজাপতি” শীর্ষক গীতি আলেখ্য দর্শক শ্রোতাদের মুগ্ধ করে।
মন মোর মেঘেরও সঙ্গীনি, আমার সকল দুখের প্রদ্বীপ, আমারও পরানও যাহা চায়- এ সকল গান রবীন্দ্রনাথকে নতুন করে পরিচয় করে দিচ্ছিল। আর প্রতি গানে প্রজেক্টরের আলোর খেলায় অন্যপ্রকৃতির দোলা দেয় উপস্থিত সবার কাছে।
বাংলাদেশ দলে ছিলেন অমৃতা দত্ত, ইসমত ফারজানা সুমি, আব্দুল আজিজ, সোহরাব হোসেন সবুজ, কুমার ইন্দ্রজিত সাধু, মাসুদুর রহমান, মিনাক্ষী রাণী, পার্থ সারথী, অলোক সরকার, পূজা কর্মকার, সুস্মিতা সাহা। বাংলাদেশের শিল্পীদের পরিবেশনায় কবি নজরুলের “হিন্দু মুসলমান ও জাগো নারী জাগো” সঙ্গীত দর্শক মনে আনে বৈষম্যহীন অসাম্প্রদায়িক সমাজের কাংখিত বার্তা।
নাসরিন খান লিপির কবি নজরুলের ‘মানুষ‘ কবিতা আবৃত্তিতে পিনপতন নিরাবতা নামে দর্শক সারিতে। আবৃত্তি শেষের করতালি যেন সকলের ঘোর ভাঙায়।
সাতক্ষীরার শিল্পকলা একাডেমিতে শুক্রবার সন্ধ্যায় দুই দেশের দু‘বাংলার শিল্পীদেও পরিবেশনার ধরনই বলে দিচ্ছিল কবিতার কোন দেশ নেই। বুঝিয়ে দিচ্ছিল কাঁটাতারের বেড়া আটকাতে পারে না প্রাণের রবীন্দ্র নজরুলকে।
নজরুল একাডেমি সাতক্ষীরার পরিচালক হাফিজুর রহমান অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। উৎসবে অতিথি ছিলেন, মীর মোস্তাক আহমেদ রবি এমপি, এড. মুস্তফা লুৎফুল্লাহ এমপি, জেলা পরিষদ প্রশাসক মুনসুর আহমেদ, জেলা প্রশাসক নাজমুল আহসান, জেলা আ‘লীগের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলামসহ অনেকে।