প্রতিনিধি, খুলনা: দেশে শিক্ষার হার বৃদ্ধি পেলেও শিক্ষার গুণগত মান কাঙ্ক্ষিত স্থানে পৌঁছায়নি বলে মন্তব্য করে রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ আবদুল হামিদ বলেছেন, শিক্ষার মান বাড়াতে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। তবেই দেশের শিক্ষাব্যবস্থা আরও এগিয়ে যাবে।
আজ বুধবার বিকেলে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পঞ্চম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে প্রদত্ত ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন।
রাষ্ট্রপতি বলেন, খুলনা অঞ্চলে রয়েছে জীববৈচিত্র্যেসমৃদ্ধ সুন্দরবন ও বঙ্গোপসাগর। এটি নিয়ে কাজ করতে হবে। আমাদের মেধাবী সন্তানদের গবেষণার উপযুক্ত পরিবেশ ও সুযোগ করে দিতে পারলে দেশ উপকৃত হবে।এজন্য খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের এসব বিষয়ে গবেষণার আহ্বান জানান তিনি।
নতুন স্নাতকদের উদ্দেশে রাষ্ট্রপতি বলেন, তোমরা দেশের উচ্চতর মানবসম্পদ। তোমাদের কাছে জাতির প্রত্যাশা অনেক।
আমাদের লক্ষ্য ২০৪১ সালের মধ্যে দেশকে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করা। সে লক্ষ্য অর্জনে তোমরা অবদান জাতি প্রত্যাশা করে।
তিনি আরো বলেন, আমার বিশ্বাস জ্ঞান-বিজ্ঞানের নবতর শাখার বিকাশ ঘটিয়ে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় আন্তর্জাতিক মানের বিশ্বদ্যিালয়ে পরিণত হবে।
অনুষ্ঠানে সমাবর্তন বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ প্রফেসর ইমেরিটাস ড. আনিসুজ্জামান এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের চেয়ারম্যান প্রফেসর আবদুল মান্নান।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামান বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্জনসহ গুরুত্বপূর্ণ দিক উল্লেখ করে বক্তব্য প্রদান করেন। এছাড়া ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন ট্রেজারার খান আতিয়ার রহমান।
২০১১ থেকে ২০১৫ সালের ৩১ আগস্ট পর্যন্ত যে সমস্ত শিক্ষার্থীর চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে সমাবর্তনে এরকম সাড়ে চার হাজার শিক্ষার্থীকে অভিজ্ঞানপত্র (সনদপত্র) প্রদান করা হয়। তাদের মধ্যে ১৫ জনকে পোস্ট গ্রাজুয়েট ডিপ্লোমা ইন আইটি (পিজিডিআইটি) ও একজন জনকে পিএইচডি উপাধি প্রদান করা হয়। পিএইচডি পেয়েছেন মো. হাসানুজ্জামান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্কুলের (অনুষদ) পরীক্ষার ফলাফলে অসাধারণ কৃতিত্বের জন্য এবার ১৪ জন শিক্ষার্থীকে স্বর্ণপদক প্রদান করা হয়।বিজ্ঞান প্রকৌশল ও প্রযু্িক্তবিদ্যা স্কুলের ইলেক্ট্রনিক্স এ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং ডিসিপ্লিনের ২০০৯-১০ শিক্ষাবর্ষের উজ্জ্বল বিশ্বাস, গণিত ডিসিপ্লিনের ২০১০-১১ শিক্ষাবর্ষের রীনা পারভীন, একই ডিসিপ্লিনের ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষের আফরোজা পারভীন, পদার্থ বিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষের মো. ইমরান হোসেন স্বর্ণপদক পান।
জীব বিজ্ঞান স্কুলের স্বর্ণপদকপ্রাপ্তরা হলেন ফিশরিজ এ্যান্ড মেরিন রিসোর্স টেকনোলজি ডিসিপ্লিনের ২০০৯-১০ শিক্ষাবর্ষের জয়ন্ত বীর ও ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষের শারমীন আক্তার, এগ্রোটেকনোলজি ডিসিপ্লিনের ২০১০-১১ শিক্ষাবর্ষের শেখ মোজাম্মেল হোসেন ও এগ্রোটেকনোলজি ডিসিপ্লিনের ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষের জয়দেব গোমস্তা।
ব্যবস্থাপনা ও ব্যবসায় প্রশাসন স্কুলের ব্যবসায় প্রশাসন ডিসিপ্লিনের ২০১০-১১ শিক্ষাবর্ষের মো. রুবেল হাসান বাপ্পী, ২০১১-১২ শিক্ষবর্ষের জান্নাতুল ফেরদৌস বৃষ্টি ও ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষের মোহাইমিনুল ইসলাম স্বর্ণপদক পেয়েছেন।
সামাজিক বিজ্ঞান স্কুলের অর্থনীতি ডিসিপ্লিনের ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষের অপূর্ব রায়, ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষের নুসরাত জাহান ও
চারুকলা ইনস্টিটিউটের প্রিন্ট মেকিং ডিসিপ্লিনের ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষের লুৎফন্নাহার লিজাও স্বর্ণপদক পেয়েছেন।
ভাষণের আগে রাষ্ট্রপতি বিশ্ববিদ্যলয়ের চ্যান্সেলর বিশ্ববিদ্যালয়ের নবনির্মিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের ফলক উন্মোচন করেন ।
সবশেষে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রমের ২৫ বছর পূর্তিতে রজতজয়ন্তীর বছরব্যাপী উৎসবের উদ্বোধন করেন।