দুর্ঘটনা না পরিকল্পিত খুন, মংলায় ঠিকাদারের মৃত্যু নিয়ে নানা প্রশ্ন

জাহিবা হোসাইন, মংলা (বাগেরহাট): ঠিকাদার খোকা তালুকদার খুন হয়েছেন নাকি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন তা নিয়ে মংলা শহর জুড়ে নানা প্রশ্ন ছড়িয়ে পড়েছে।

পরিবারের পক্ষ হতে তার মৃত্যুকে খুন দাবি করা হয়েছে। তারা বলছেন, ব্যবসায়িক কারণে প্রতিপক্ষের লোকজন তাকে পরিকল্পিতভাবে খুন করে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় মারা গেছে বলে প্রচার চালাচ্ছে।

অন্যদিকে এলাকাবাসীও মংলার দিগরাজ এলাকার বাসিন্দা এ ঠিকাদারের মৃত্যুকে খুন বলে সন্দেহ করছেন। খোকার মাথায় ধারালো অস্ত্রের আঘাত, দুর্ঘটনায় পতিত মোটরসাইকেলটির অক্ষত থাকা আর খোকা তালুকদারের সঙ্গে থাকা দুজনের পালিয়ে যাওয়ায় তারা এরকম সন্দেহ করছেন।

এদিকে পুলিশ প্রাথমিকভাবে এটিকে দুর্ঘটনা বলছে। তবে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ উদঘাটনে কাজ শুরু করেছে পুলিশ।

খোকা তালুকদারের স্বজন ও স্থানীয়রা জানান, খোকা তালুকদারকে (৪২) বৃহস্পতিবার রাতে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায় একই এলাকার তপন ঘোষ ও নাজমুল হোসেন। পরে রাত গভীর হতে থাকলে বাড়িতে না ফেরায় পরিবারের লোকজন ফোন করলে খোকা বিপদের মধ্যে আছে বলে জানানো হয় পরিবারকে। এর পর পরই খোকার সঙ্গে থাকা তপন ও নাজমুল খোকার পরিবারকে ফোনে জানায় যে খোকা মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় মারা গেছে।

খোকার স্বজনদের দাবি, তাকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। খোকার সাথে স্থানীয় সাবেক কমিশনার ও ঠিকাদার তৈয়বের সাথে বিরোধ ও মামলা চলে আসছিল দীর্ঘদিন ধরে। আর তৈয়বই তাকে খুন করিয়েছে বলে অভিযোগ খোকার পরিবারের। তৈয়ব গত কয়েকদিন আগে খোকাকে হত্যার হুমকিও দেয় বলে জানান পরিবারের সদস্যরা।

mongla contractor dies in road mishap1
মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় খোকা মারা গেছে বলে প্রতিপক্ষ অপপ্রচার করছে বলেও দাবি করেন খোকার স্ত্রী কোহিনুর ও বড় মেয়ে শিউলি।

এলাকাবাসীও বলছে খোকাকে হত্যা করা হয়েছে। তার মাথায় ধারালো অস্ত্রের আঘাত ছিল। এক হাত ও দুই পা ভাঙা, শরীরের বিভিন্নস্থানে জখম রয়েছে।

এলাকাবাসী অভিযোগ করে বলেন, যে মোটরসাইকেলের দুর্ঘটনার কথা বলা হচ্ছে সেটি অক্ষত। মোটরসাইকেলটির কোথাও দুর্ঘটনা পতিত হয়েছে এমন কোনো চিহ্ন নেই। এলাকাবাসী আরো জানান, ঘটনার পর তপন গোপালগঞ্জে আর নাজমুল খুলনা পালিয়ে গেছেন। তারা আরো বলেন, যদি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনাই হবে তাহলে তার সঙ্গী তপন পালিয়ে গোপালগঞ্জ গেলেন কেন?

তৈয়ব কাজীর সাথে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে তিনি কোনো কিছুই জানেন না। যারা খোকার সাথে ছিল তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে বেরিয়ে আসবে কে বা কারা এর সঙ্গে জড়িত।

এ বিষয়ে মংলা থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ লুৎফুর রহমান বলেন, ঠিকাদার খোকার মৃত্যুর প্রকৃত কারণ উদঘাটনে কাজ শুরু করেছে পুলিশ। ময়না তদন্তের রিপোর্টের পর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তবে প্রাথমিকভাবে এটি দুর্ঘটনা বলে মনে হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.