হাকিম বাবুল, শেরপুর: শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার একটি পাহাড়ি টিলা থেকে ৪৩ হাজার গোলাবারুদ, ৬০টি ভারী অস্ত্রসহ বিভিন্ন সামরিক সরঞ্জাম উদ্ধার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ান (র্যাব)।
সোমবার (১ ফেব্রুয়ারি) ভোররাত থেকে র্যাব হেডকোয়ার্টার ও র্যাব-৫ এর বিশেষ দল বুরুঙ্গা সীমান্তের কালাপানি এলাকার চেংবান্ধা পাহাড়ের মাটির নিচ থেকে এসব অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার করে।
উদ্ধার করা গোলাবারুদের মধ্যে ২ হাজার বিমান বিধ্বংসী কামানের গোলা রয়েছে। ভারী মেশিনগানের ২২ হাজার গুলি ও এসএমজির ১৭ হাজার গুলি, বিমান একটি বিধ্বংসী স্পেয়ার ব্যারেল, হেভী মেশিনগানের দুটিসহ মেশিনগানের সাতটি স্পেয়ার ব্যারেল, দুটি স্না্ইপার ও একটি একে-৫৬ রাইফেল, দুটি ৭.৬২ এমএম পিস্তলসহ ৬০টি অস্ত্র পাওয়া যায় র্যাবের অভিযানে। সামরিক সরঞ্জামের মধ্যে রয়েছে ৩৭টি ম্যাগাজিন, ছয়টি ওয়াকিটকি, ক্লিন সেন্টার ক্যানভাস, ক্রানভাস, কম্পাস, ডিসি চার্জার, স্যাটেলাইট ফোন, টেলিস্কোপিক সাইট, এইচএফ সেট, ড্রাম ম্যাগাজিনসহ বিভিন্ন সামরিক সরঞ্জামাদি।
বিকেলে ঘটনাস্থলে র্যাবের লিগ্যাল এইড এ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক উইং কমান্ডার মুফতি মাহমুদ খান জানান, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে সোমবার শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার বুরুঙ্গা সীমান্তের কালাপানি এলাকার চেংবান্ধা রিজার্ভ ফরেস্টের পাহাড়ি টিলায় অভিযান চালানো হয়। দুই দিন ধরে গোয়েন্দা তৎপরতা শেষে পাহাড়ি টিলা এলাকা সুইপিং করে চারটি স্পট সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে এ অভিযান চলে। ভোর তিনটা থেকে অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানান তিনি।
অস্ত্র-গোলাবারুদ কাদের হতে পারে এ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মামলার পর তদন্তে সেটা বেরিয়ে আসবে। এখনই এ বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করতে চাননি তিনি।
মধুটিলা ইকোপার্কের পাশে ও ভারতের মেঘালয় সীমানা সংলগ্ন ওই এলাকায় অভিযানকে কেন্দ্র করে বিজিবি ও পুলিশ এলাকাটি ঘেরাও করে রাখে। জনগণের চলাচলের উপর আরোপ করা হয় বিধি-নিষেধ। রোববার সকালে র্যাব-৫ এর লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাহবুব আলম এবং কোম্পানি কমান্ডার মোব্বাশ্বেরুল ইসলামের নেতৃত্বে র্যাবের অর্ধশতাধিক সদস্য চেংবান্ধা পাহাড়ে অভিযান চালায়।
এর আগেও ২০০৭ থেকে ২০১১ সালের মধ্যে বিভিন্ন সময়ে ঝিনাইগাতীতে ভারত সীমান্ত সংলগ্ন এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে অন্তত ৫০ হাজার গুলি, রকেট, মাইন ও বিভিন্ন অস্ত্র উদ্ধার হয়। ২০১২ সালে নালিতাবাড়ীর এক গ্রাম থেকে উদ্ধার করা হয় একে-৪৭ রাইফেল ও গুলি। মাইন উদ্ধারের পর ২০১০ সালে বিজিবির পক্ষ থেকে ধারণা করা হয়েছিল, সেগুলো ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন ইউনাইটেড লিবারেশন ফ্রন্ট অব আসামের (উলফা) ফেলে যাওয়া গোলাবারুদ।