স্বপন কুমার কুন্ডু, ঈশ্বরদী (পাবনা): ঈশ্বরদীতে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের সময় গুলি বিনিময় ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এসময় ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও ব্যাংক ভাঙচুর করা হয়।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ২০ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ও ১০ রাউন্ড টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে।
রোববার সন্ধ্যার আগে ঈশ্বরদী বাজারের এক নম্বর গেটের সামনে এই সংঘর্ষ হয়। ১৪ জুলাই সন্ত্রাসবিরোধী মিছিল নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষ ও পরবর্তীতে মামলা নিয়ে এই সংঘর্ষের সূত্রপাত বলে জানা গেছে।
জানা যায়, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান মখলেছুর রহমান মিন্টুর সমর্থকদের মোটরসাইকেল বহরে অতর্কিত হামলা চালায় আওয়ামী লীগের অন্য একটি গ্রুপ। হামলাকারী গ্রুপটি পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও মেয়র আবুল কালাম আজাদ মিন্টুর সমর্থক বলে অভিযোগ করেছে উপজেলা চেয়ারম্যানের পক্ষ।
এর আগে দুপুরে পৌর আওয়ামী লীগের পক্ষে এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের বিপক্ষে মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে প্রেসক্লাবে একটি সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। বিকেলে উপজেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ হতে ওই সংবাদ সম্মেলনের বিরোধিতা করে আলেঅবাগ মোড় হতে মখলেছুর রহমান মিন্টুর নেতৃত্বে মোটরসাইকেল মিছিল বের করা হলে হামলা, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, এসময় প্রায় দুই গ্রুপের সমর্থকরা অন্তত ২২টি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায়। এসময় প্রগতি রেঁস্তোরা, প্রাইম ব্যাংক ও রাস্তার পাশের কয়েকটি দোকান ভাঙচুর হয়।
সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে আহূত সংবাদ সম্মেলনে উপজেলা চেয়ারম্যান মখলেছুর রহমান মিন্টু এই হামলার ঘটনায় পৌর আওয়ামী লীগের সমর্থকদের দায়ী করে জানান, শান্তিপূর্ণ মোটরসাইকেল বহরে হামলায় ২৫/৩০ জন আহত হয়েছে। এসময় তিনি আরো বলেন, গত ১৪ জুলাই আওয়ামী লীগ কার্যালয় হতে জঙ্গি ও সন্ত্রাসবিরোধী বিক্ষোভ মিছিল বের হলে সংগঠনের অভ্যন্তরে লুকিয়ে থাকা সন্ত্রাসীরা আগ্নেয়াস্ত্র, বোমা ও অন্যান্য দেশি অস্ত্র নিয়ে মিছিলে আক্রমণ করে। কিন্তু আজ তাদের সংবাদ সম্মেলনে সম্পূর্ণ মিথ্যা-বানোয়াট বক্তব্য ঈশ্বরদীবাসীকে বিভ্রান্ত করা হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে এই মিথ্যাচারের প্রতিবাদ জানানো হয়। এসময় শ্রমিক নেতা রশীদুল্লাহ, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি গোলাম মোস্তাফা চান্না, অর্থ সম্পাদক সাদেক আলী বিশ্বাস, দপ্তর সম্পাদক জুলমত হায়দার, যুবলীগ নেতা রাজীব হায়দার, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আলাউদ্দিন বিপ্লবসহ আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
মোটরসাইকেল বহরে হামলা প্রসঙ্গে অভিযুক্ত পক্ষের এক নেতা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, কে বা কারা হামলা করেছে আমরা জানি না। মিথ্যা দোষ চাপানো হচ্ছে। এসময় তিনি আরো বলেন, দাশুড়িয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক বাদশা মালিথা হামলায় আহত হয়ে রাজশাহীতে স্থানান্তর করার ঘটনা সম্পূর্ণই মিথ্যাচার। প্রকৃতপক্ষে তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হন। তাকে প্রথমে ঈশ্বরদী হাসপাতালে এবং পরে রাজশাহীতে স্থানান্তর করা হয়।