গফরগাঁওয়ে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী খুন, যুবককে জবাইয়ের চেষ্টা, আইনশৃঙ্খলার অবনতিতে থানা ঘেরাও

আতাউর রহমান মিন্টু, গফরগাঁও (ময়মনসিংহ): ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে এক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে খুন করা হয়েছে। অন্য একটি ঘটনায় ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ করায় ঈদের দিন হাজার হাজার লোকের সামনে এক যুবককে জবাই করে হত্যার চেষ্টা হয়েছে।

উপজেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির প্রতিবাদে এলাকাবাসী শহরে বিক্ষোভ মিছিল করেছে এবং থানা ঘেরাও করেছে।

gafargaon protest over law and order situation
সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার চেয়ে এবং আইনশৃঙ্খলার অবনতির প্রতিবাদে এলাকবাসী থানা ঘেরাও করে।

জানা গেছে, বাকিতে শার্ট না দেয়ায় উপজেলার চরআলগী ইউনিয়নের চরমছলন্দ কান্দাপাড়া মোড়ের কাপড় ব্যবসায়ী আজাহারুল ইসলামের সাথে ক্রেতা সাদ্দাম, রানা, মফিজুলের সাথে তর্ক হয়। এর জের ধরে বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে সাদ্দাম, রানার নেতৃত্বে ১৫/১৬ জনের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা আজাহারুলের দোকানে হামলা চালায়। এ সময় হামলাকারীদের ফেরাতে গেলে সন্ত্রাসীরা ব্যবসায়ী আজাহারুলের বড় ভাই বাদাম ব্যবসায়ী আজাফরকে (৩৫) কুপিয়ে, লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। তাকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে ভর্তি করা হলে রাত সাড়ে ১০টার দিকে আজাফর মারা যাস। এলাকাবাসী ঘটনাস্থল থেকে মামলার আসামি ও ভাড়াটে খুনি হিসেবে পরিচিত হেলাল (২৫), বাবু (১৯) ও দ্বীন ইসলামকে (৩৪) আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে।

অন্য ঘটনায় ঈদের দিন (শুক্রবার) বিকেলে একদল দুর্বৃত্ত পৌরশহরের বিশ্বরোড আলতাফ গোলন্দাজ সেতু এলাকায় হাজার হাজার লোকের সামনে মফিজ নামে এক যুবককে ক্ষুর দিয়ে জবাই করে হত্যার চেষ্টা চালায়।

জানা গেছে, ঈদের বিকেলে  আলতাফ গোলন্দাজ সেতু এলাকায় নারী-শিশুসহ হাজারো লোকের ঢল নামে। এ সময় হাদি, তুষার, শরিফ, ইমরানের নেতৃত্বে একদল বখাটে মেয়েদের উত্যক্ত করছিল। সেতু এলাকা জন্মেজয় গ্রামের মুন্তা মিয়ার ছেলে মফিজ বখাটেদের বাধা দিলে হাদির নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী মফিজকে সেতু এলাকায় উপস্থিত হাজার হাজার লোকের সামনে ক্ষুর দিয়ে জবাই করে হত্যার চেষ্টা চালায়। উপস্থিত লোকজন মফিজকে বাঁচাতে এগিয়ে আসলে বখাটেরা সোহাগ (১৩), নাসির (১৩), রাকিব (১৭), সুমন (১৬) ও ঈসমাইলকে (১৪) ক্ষুর দিয়ে আঘাত করে গুরুতর আহত করে। এ সময় শরিফ নামে এক বখাটেকে জনতা ধাওয়া করে আটক করে পলিশের হাতে সোপর্দ করে। গুরুতর আহত মফিজ ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে।

এসব ঘটনায় আতঙ্কিত এলাকাবাসী শনিবার দুপুরে সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারের দাবি ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির প্রতিবাদে উপজেলা সদরে বিক্ষোভ মিছিল বের করে এবং থানা ঘেরাও করে।

উল্লেখ্য গত ৫ সেপ্টেম্বর উপজেলার পাইথর গ্রামে আজিজুল হক নামে এক যুবক খুন হয়। ভাড়াটে খুনি দিয়ে তাকে হত্যার অভিযোগে তার পিতা সুলতান মিয়া, মা লাইলি বেগম, ভাই এনামুল পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়। গত ৯ সেপ্টেম্বর দুপুরে মাদকাসক্ত ও জুয়াড়ি মোফাজ্জল টাকা না দেয়ায় তার মা জোসনা খাতুনকে (৫০) কুপিয়ে খুন করে। এলাকাবাসী মোফাজ্জলকে আটক করে থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করে। গত ১৪ সেপ্টেম্বর রাতে মাখল কালদাইর গ্রামে আওয়ামী লীগ নেতা মহর উদ্দিনকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.